ফরিদপুরে এবার পিস্তল হাতে এক মৎস্যজীবী লীগ নেতার ছবি ভাইরাল হয়েছে। পিস্তল হাতে ভাইরাল হওয়া ওই মৎস্যজীবী লীগ নেতার নাম আসাদুজ্জামান পরশ সিকদার (৩৫)। তিনি জেলা মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বোয়ালমারী উপজেলার বাসিন্দা।
এর আগে ফরিদপুরের দুই ছাত্রলীগ নেতা কোমরে পিস্তল গুজে এবং অস্ত্রসহ টিকটক ভিডিও করে সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। এ রেশ না কাটতেই এবার আলোচনায় এলেন মৎস্যজীবী লীগ নেতা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এক সাংবাদিকের ফেসবুক আইডিতে পিস্তল হাতে আসাদুজ্জামানের দু’টি ছবি পোস্ট করা হয়। এর মধ্যে একটি ছবিতে দেখা যায়, সামনের দিকে তাক করা অবস্থায় পিস্তলটি ধরে পোজ দিচ্ছেন আসাদুজ্জামান। আরেকটি ছবিতে দেখা গেছে, গভীর মনোযোগ দিয়ে পিস্তলটি দেখছেন তিনি।
ভাইরাল হওয়া ছবি দু’টি নিজের বলে স্বীকার করেছেন আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ছবি দু’টি ৫ বছর আগে ঢাকার একটি অস্ত্রের শোরুমে তোলা। বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিকুল মৃধার ভাগ্নে ও পৌর যুবলীগের সদস্য মিনহাজুল আবেদীন ওরফে চয়ন ছবি দুটি তুলেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, মিনহাজুল একটি এয়ারগান কিনতে অস্ত্রের ওই শোরুমে গিয়েছিলেন। এ সময় মিনহাজুল পিস্তলটি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করেন। পরে আমিও নেড়ে দেখি। এ অবস্থায় মিনহাজুল তার ফোনে ছবি দু’টি তোলেন।
আসাদুজ্জামানের অভিযোগ, তিনি এতদিন মিনহাজুলের মামা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিকুল মৃধার সমর্থক ছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমানের অনুসারী হয়েছেন। এতে পিকুল মৃধা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে ৫ বছর আগে তোলা ছবি দু’টি ফেসবুকে ছড়িয়েছেন।
এসব অভিযোগের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে মিনহাজুল বলেন, ছবি দুটি ঢাকায় একটি অস্ত্রের শোরুমে তোলা। এ সময় ছবি দু’টি আসাদুজ্জামানের ম্যাসেঞ্জারসহ পরিচিত কয়েকজনকে দিয়েছিলাম। এরপর নতুন করে আর কাউকে দেইনি। কেউ হয়তো ম্যাসেঞ্জারে থাকা পুরনো ছবিই ফেসবুকে ছেড়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিকুল মৃধা বলেন, রাজনীতির কারণে সম্পর্কের অবনতি ঘটার প্রশ্নটি এখানে অবান্তর। এক সাংবাদিক তার (আসাদুজ্জামান) হাতে অস্ত্রসহ ছবিগুলো পোস্ট করেছেন। এর ব্যাখ্যা তাকেই দিতে হবে।
জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক মো. আব্দুস সোবহান বলেন, আমরা সঠিক ঘটনা জানার চেষ্টা করছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ফেসবুকে পোস্ট করা ছবি দু’টি দেখেছি। দেখে বোঝা যাচ্ছে, ছবিটি কোনো অস্ত্রের দোকান থেকে তোলা। যিনি ছবিটি ভাইরাল করেছেন তিনি কাজটি ঠিক করেননি। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।