ডলার–সংকটের কারণে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ায় লাগাম পড়ছে। বাংলাদেশে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার জন্য অনুমোদিত বিজ্ঞাপনী সংস্থা এইচটিটিপুল গতকাল মঙ্গলবার তাদের গ্রাহকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ কথা উল্লেখ করেছে।
এইচটিটিপুল বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালক সানি নাগপাল স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মেটার পরিষেবা সাময়িকভাবে পাওয়া যাবে না অথবা সীমিত থাকবে। ডলার–সংকট ও বিদেশে টাকা পাঠানো নিয়ে জটিলতার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে এইচটিটিপুল আরও বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এই প্ল্যাটফর্মে (ফেসবুক) গ্রাহকদের জন্য তাদের প্রস্তাবিত বিজ্ঞাপনের জায়গা সীমিত হয়ে যাবে। এতে গ্রাহকদের আসন্ন প্রচারাভিযানের (ক্যাম্পেইন) জন্য বিজ্ঞাপনের জায়গা সীমিত হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া কোনো কোনো গ্রাহকের চলমান বা অনাগত প্রচার কার্যক্রম বন্ধ বা বাতিল করা হতে পারে।
এ অসুবিধার জন্য গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে এইচটিটিপুল বলেছে, সমস্যা সমাধানে তারা কাজ করছে। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে তাদেরকে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এটা অপ্রত্যাশিত ও তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার পোল্যান্ডভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম নেপোলিয়নক্যাটের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ৮০০।
বাংলাদেশে ই-কমার্সের বাজারের একটি বড় অংশ ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসা, যারা ফেসবুকে পেজ চালু করে নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। পণ্যের প্রচারণার জন্য তাঁরা ফেসবুক বা মেটার অন্য প্ল্যাটফর্মগুলোতেই বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) থেকে জানা যায়, চলমান অর্থনৈতিক সংকটের ধাক্কা ই-কমার্সভিত্তিক ব্যবসাতে পড়লেও এবারের ঈদুল ফিতর ঘিরে উদ্যোক্তারা কিছুটা ব্যবসা করতে পেরেছেন। এবার ঈদে ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে, যার মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিজ্ঞাপন কমিয়ে দেওয়া হলে ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ই-ক্যাবের যুগ্ম সম্পাদক ও ফেসবুকভিত্তিক নারী উদ্যোক্তাদের প্ল্যাটফর্ম উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের (উই) সভাপতি নাসিমা আক্তার বলেন, নারী ও ছোট উদ্যোক্তারা এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিজ্ঞাপনের জন্য তাঁদের বড় কোনো বাজেট থাকে না। তাঁরা ২০ থেকে ৩০ ডলার দিয়ে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন।