ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তবে সময় গড়ানোয় তাদের বেঁচে থাকার আশা কমছে।
তুরস্কের জরুরি সমন্বয় কেন্দ্র এসএকেওএম জানিয়েছে, তুরস্কের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯৬০৫ জন হয়েছে। খবর সিএনএনের
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের প্রতিবেশী সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৪৫৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদের মধ্যে উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১৬০ জন হয়েছে বলে ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ভূমিকেম্পের পর থেকে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি আহত প্রায় লাখের কাছে পৌঁছে গেছে। শুধু তুরস্কেই ছয় হাজারের ওপর ভবন ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের তাণ্ডব থেকে বেঁচে গিয়েও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
তবে সময় যত পেরোচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধারের আশাও ততই ফিকে হয়ে আসছে।
তুরস্কে ভূমিকম্পের প্রায় ১৫২ ঘণ্টা পর ৮৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার তুরস্কের হাতায় প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ইসমিহান নামে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হয়।
এর আগে হাতায় প্রদেশ থেকেই কুডি নামের এক ১২ বছর বয়সী কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়, যে প্রায় ১৪৭ ঘণ্টা ধ্বংস্তস্তূপের নিচে আটকে ছিল। তাকে উদ্ধারের পর উদ্ধারকারীরা কুডিকে বলেন, ‘তুমি একটা অলৌকিক বিষয়।’
তার আগে উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপে ১৩৯ ঘণ্টা আটকে থাকার পর সাত মাস বয়সী এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করে।
সিরিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত আর কাউকে পাওয়ার আশা তারা করছে না জানিয়ে সেখানে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি টেনেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটস। দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধের কারণে এই এলাকায় ত্রাণ সরবরাহের প্রচেষ্টা বিঘ্নিত হচ্ছে।
গত সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে। পরে আরও কয়েক দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে তুরস্কের পাশাপাশি সিরিয়াতেও ব্যাপক ক্ষয়িক্ষতি হয়েছে।