পাড়াবাসীর অভিযোগ, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া তিনটি পরিবারের লোকজন সবচেয়ে সংকটে আছেন। রেংইয়ুং ম্রো, সিংচ্যং ম্রো ও বিধবা চামরুম ম্রোর বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কিছুই নেই। তাঁরা আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। হামলাকারীরা চারটি পরিবারের বাড়ি ভাঙচুর করেছে। তাঁরাও অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। পাড়ার ১১টি পরিবার এমনিতে দরিদ্র; তার ওপর হামলাকারীরা চাল, কাপড়চোপড়, ছাগল, মুরগি, কোদাল, দা—যেখানে যা পেয়েছে, সবকিছু লুট করে ট্রাকে তুলে নিয়ে গেছে। এখন কেউ কাউকে সাহায্য-সহযোগিতা করার মতো অবস্থায় নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত চামরুম ম্রো বলেন, তিনি দুই শিশুসন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে আছেন। হামলাকারীরা যখন বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করছিল, তখন যে কাপড় পরা অবস্থায় পালিয়েছেন, সেই কাপড় ছাড়া আর কিছু নেই। বাবার বাড়িরও সবকিছু হামলাকারীরা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এখন পাহাড়ে প্রচণ্ড শীত। কম্বল ছাড়া ঘুমানো যায় না। কাপড়চোপড় না থাকায় আগুন জ্বালিয়ে রাত কাটানো ছাড়া তাঁদের উপায় ছিল না।
সিংচ্যং ম্রো বলেছেন, তাঁর বাড়ি জরাজীর্ণ হওয়ায় নতুন করে তৈরি করছিলেন। প্রায় নির্মাণ শেষ হওয়া বাড়ি ও পুরোনো বাড়ি, দুটিই পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কোনোরকমে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছেন। কিন্তু খাওয়া-পরার আর কিছুই নেই। তাঁর স্ত্রী দিনমজুরি করে কোমরতাঁত বুননের সুতা কেনার চার হাজার টাকা জমিয়েছিলেন। সেই টাকাগুলোও লুট হয়ে গেছে।
পাড়াপ্রধান রেংয়েন ম্রো বলেছেন, হামলা ও লুটপাটের ঘটনার পর এমনিতে পাড়াবাসী আতঙ্কে আছেন। গতকাল রাত ৯টার দিকে পাড়ার পাশে ১০ থেকে ১২টি টর্চলাইটের আলো দেখা যাওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক আরও ছড়িয়ে পড়ে। পুরুষেরা পালা করে সারা রাত পাহারা দিয়েছেন। পুলিশকে জানানোর আধা ঘণ্টা পর টর্চলাইটের আলো আর দেখা যায়নি। তবে বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটছে না।