ল্যারি নাসার—যুক্তরাষ্ট্রের একজন চিকিৎসক। দেশটির তরুণ নারী খেলোয়াড়দের (জিমন্যাস্ট) যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে ছিলেন তিনি। বন্দীজীবনে আবারও সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন ল্যারি। কেননা, কারাগারে অন্যান্য বন্দীরা তাঁকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করেছেন। হাসপাতালে ভর্তি হতে হলেও এখন শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার বিকেলে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ইউএস পেনিটেনশিয়ারি কোলম্যান কারাগারে। এখানেই বন্দী ছিলেন ল্যারি।
দেশটির ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজনস জানিয়েছে, ওই বিকেলে সেখানকার একজন বন্দীকে লাঞ্ছিত করা হয়। তবে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে তাঁর নাম–পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজনসের মুখপাত্র বেনজামিন ও’কোনে এক বিবৃতিতে বলেন, আহত ওই বন্দীকে দ্রুত স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল রয়েছে। এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইকে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারাগারে অভন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে। বেনজামিন জানান, এ সময় অন্য কোনো বন্দী কিংবা কারারক্ষী আহত হননি।
কারা কর্তৃপক্ষ নাম–পরিচয় প্রকাশ না করলেও মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোয় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ছুরিকাঘাতের শিকার ওই বন্দী চিকিৎসক ল্যারি।
২০১৮ সালে সাজা পান ল্যারি। তখন থেকে কারাগারেই আছেন। কারা অভ্যন্তরে তাঁকে অন্তত ১০ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তিনি ঘাড়ে, পিঠে ও বুকে আঘাত পেয়েছেন বলে সিএনএনকে জানান যুক্তরাষ্ট্রের লোকাল কারেকশন অফিসার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জো রোজাস।
যুক্তরাষ্ট্রের ১৬০ জন তরুণ নারী খেলোয়াড়কে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া ল্যারিকে সব মিলিয়ে ১৭৫ বছরের বেশি সময়ের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ল্যারির কাছে হয়রানির শিকার হওয়া জিমন্যাস্টদের মধ্যে অলিম্পিকজয়ী সিমোনে বাইলস, অ্যালি রাইসমান, ম্যাককেইলা ম্যারোনি রয়েছেন।
ল্যারির সাবেক কর্মস্থল মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি তাঁর হাতে হয়রানির শিকার শতাধিক নারীকে ৫০ কোটি ডলার দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের জিমন্যাস্টিক কর্তৃপক্ষ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকস কমিটি ৩৮ কোটি ডলার দেবে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন সিনেটে কয়েকজন নারী খেলোয়াড় সাক্ষ্য দেন। তাঁদের মধ্যে বাইলস ও ম্যারোনির মতো তারকা জিমন্যাস্টরাও ছিলেন। তাঁরা বছরের পর বছর ধরে ল্যারির হাতে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেন। তাঁদের অভিযোগ, ল্যারির বিরুদ্ধে এফবিআইয়ের তদন্ত কাজ যথাযথ ছিল না। অব্যবস্থাপনায় ভরা ছিল তদন্তপ্রক্রিয়া।