খালিস্তানপন্থী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা নিয়ে কানাডার করা অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ হাজিরের জন্য অটোয়ার ওপর চাপ বাড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে কানাডার গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় কর্মকর্তা-কূটনীতিকদের জড়িত থাকার বিষয়ে কানাডীয় সরকারের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (সিবিসি) প্রতিবেদনে বলা হয়, হরদীপ সিং হত্যাকাণ্ড নিয়ে কয়েক মাসের তদন্তে নানা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশটিতে কর্মরত ভারতীয় কূটনীতিকসহ কর্মকর্তাদের যোগাযোগসংক্রান্ত তথ্য আছে।
একাধিক জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত সূত্রের ভাষ্য, ভারতীয় কর্মকর্তারা কানাডার কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এ অভিযোগ অস্বীকার করেননি।
তবে দ্য গার্ডিয়ান স্বাধীনভাবে সিবিসির এই প্রতিবেদনের তথ্য যাচাই করতে পারেনি।
শিখ নেতা হরদীপ গত জুনে কানাডায় খুন হন। তাঁর হত্যার পেছনে ভারতীয় এজেন্টদের হাত থাকার বিষয়ে সম্প্রতি কানাডার পার্লামেন্টে অভিযোগ করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার অভিযোগ নাকচ করে ভারত। এই ঘটনার জেরে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, হরদীপ হত্যার তদন্তে নয়াদিল্লির কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার আশায় সম্প্রতি কানাডার গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা উপদেষ্টা নয়াদিল্লি সফর করেন।
ট্রুডোর করা অভিযোগের বিষয়ে আরও তথ্য প্রকাশের জন্য তাঁর সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়ছে।
তবে ট্রুডো এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করেননি যে অটোয়ার কাছে থাকা তথ্যপ্রমাণ ভাগাভাগি করবে তাঁর সরকার।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রুডো। এ সময় তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিরোধ বাড়াতে চাইছেন না। তবে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে থাকা ‘সত্য’ উদ্ঘাটনে কানাডার কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার জন্য তিনি ভারতের প্রতি আহ্বান জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, কানাডার করা অভিযোগকে উদ্বেগের বিষয় হিসেবে বিবেচনা করছে হোয়াইট হাউস। এ প্রেক্ষাপটে বিষয়টি নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
কানাডার সুপরিচিত শিখ নেতা ছিলেন হরদীপ। তিনি ভারতের পাঞ্জাবে শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্র খালিস্তানের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন। তাঁকে ‘ওয়ান্টেড’ সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছিল ভারত।