স্বস্তির ঈদযাত্রায় বিড়ম্বনা তিন চাকার যানবাহন

0
157
মহাসড়কে অবাধে চলছে তিন চাকার যানবাহন-

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে এবার ঈদ যাত্রায় যানজট না থাকলেও যাত্রী পরিবহনকারী দূরপাল্লার বাস-ট্রাক চালকদের হুড়োহুড়ি রয়েছে। এবড়ো-থেবড়ো মহাসড়কে যানবাহনের চাপের পাশাপাশি চালকদের হুড়োহুড়িও চোখে পড়ার মতো। স্বল্প আয়ের ঘরমুখো মানুষজন নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে দূরপাল্লার বাস না পেয়ে প্রচন্ড গরমের মধ্যে ট্রাকেও ছুটছেন অনেকেই। চালকদের হুড়োহুড়িতে স্বস্তির ঈদযাত্রায় কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে উত্তরের যাত্রীদের। বঙ্গবন্ধু সেতুর দু’পারে মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলা অংশে শুক্রবার যানজট ও যানবাহনের ধীরগতি তেমন ছিল না।

সরু রাস্তায় চালকরা লেন না মানলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট

সিরাজগঞ্জ থেকে রংপুরগামী জেনিন বাস সার্ভিসের চালক বাবু হোসেন জানান, ‘সিরাজগঞ্জ থেকে সকাল সাড়ে সাতটায় সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের এম এ মতিন বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রা করি। পথে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ি ছাড়া আর কোনো স্থানে সমস্যা হয়নি। যানজট ও ধীরগতির কারণে দুই স্থানে বিশ মিনিট সময় বেশি লেগেছে। আর সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনা থেকে বগুড়া, গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ি হয়ে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়কে সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, নসিমন-করিমন ও ভটভটি অবাধে চলছে। যে কারণে দূরপাল্লার যান চলাচলে প্রায়ই সমস্যা হচ্ছে। এসব বন্ধ হলে ঈদযাত্রা আরও স্বস্তির হতো।

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল-চান্দাইকোনা অংশে কামারপাড়া, রয়হাট্টি ও চান্দাইকোনা সেতু তিনটির নির্মাণ কাজ ঈদের আগে শেষ হয়নি। অসম্পূর্ণ থাকলেও ওপরিভাগে সাসেক প্রকল্পের মাধ্যমে জয়েন্ট এক্সপানশন বা ফাঁকা স্থানে স্টিলের পাত ও বিটুমিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে সহজেই যানবাহন পারাপার হওয়ায় এবার সিরাজগঞ্জ জেলায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি চালক-যাত্রীদের। নতুন ওই সেতু তিনটির পাশে আগে থেকে পুরাতন সেতু থাকলেও ঈদপূর্ব যানবাহনের চাপ ও পারাপার নিয়ে আগে থেকেই শঙ্কায় ছিল পুলিশ স্থানীয় প্রশাসন। গতবারের বিড়ম্বনার চিত্র পাল্টে এবারে স্বস্তি পাচ্ছেন উত্তরের যাত্রীরা।

যানজট ও যানবাহনের ধীরগতি তেমন ছিল না আজ

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও রংপুর পর্যন্ত প্রায় একশ নব্বই কিলোমিটার অংশে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক)-২ সংযোগ সড়ক প্রকল্পের ফোর লেন সম্প্রসারণ কাজ চলমান রয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে ভুক্তভোগী বা ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান বা আপত্তি-নিস্পত্তি না হওয়ায় সেখানে জমি অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ হয়নি। ওই দু’স্থানে সাসেক প্রকল্পের কাজও জোরেসোরে শুরু না হওয়ায় মহাসড়ক অনেকটাই সরু রয়েছে। যে কারণে দূরপাল্লার বাস-ট্রাকের চালকরা হুড়োহুড়িতে চলতে গেলেই যানজট বা ধীরগতির ফাঁদে পড়ছেন।

সাসেক প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ড. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ‘উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকায় আপত্তি নিস্পত্তি না হওয়ায় সেখানে জমি অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ হয়নি। যে কারণে সেখানে সমস্যা হচ্ছে। জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আশা করছি এ ধরনের সমস্যা আগামীতে থাকবে না।’

হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক শুক্রবার দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়িতে এমনিতেই  মহাসড়ক সরু। তার ওপর দু’পাশে যত্রতত্র গাড়ি রেখে চালকরা রাস্তা আরও চাপিয়ে ফেলে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশ সুপারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহাসড়কে অবৈধ সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, নসিমন-করিমন ও ভটভটির অবাধে চলাচলের বিষয়টিও দেখা হবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.