সাময়িক বন্ধ রাশিয়ার কিছু জ্বালানি রপ্তানি, তেলের দাম আবার বেড়েছে

0
128
জ্বালানি তেল

বিশ্ববাজারে আজ সোমবার আবারও তেলের দাম বেড়েছে। মস্কো সাময়িকভাবে কিছু জ্বালানির রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বাজারে তেলের সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কায় এই মূল্যবৃদ্ধি। তবে বিনিয়োগকারীরা এখনো মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার নিয়ে সতর্ক। কারণ, তারা আবার সুদহার বাড়ালে বাজারে তেলের চাহিদা কমে যেতে পারে।

রয়টার্স জানিয়েছে, আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম ৪৮ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৯৩ দশমিক ৭৫ ডলারে উঠেছে, যদিও গত শুক্রবার তা ৩ সেন্ট কমেছিল।

এদিকে ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট বা ডব্লিউটিআই ক্রুডের দামও টানা দুই অধিবেশনে বেড়েছে। আজ সকালে এই তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৯০ দশমিক ৫৩ ডলারে উঠেছে।

বাজারে সরবরাহ এমনিতেই টান টান। রাশিয়া সাময়িকভাবে ডিজেল ও গ্যাসোলিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সেই সঙ্গে ফেডারেল রিজার্ভ বলেছে, সুদহার আরও বেশ কিছুদিন বাড়তি থাকবে। এই বাস্তবতায় অনলাইনে ব্যবসা করা আইজি মার্কেটসের বিশ্লেষক টনি সিকামোর রয়টার্সকে বলেন, রাশিয়ার সাময়িকভাবে তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার খবর বাজার ঠিকঠাক হজম করতে পারেনি।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম মাসাধিককাল ধরে বাড়ছে। এর মধ্যে টানা তিন সপ্তাহ বৃদ্ধির পর ফেডারেল রিজার্ভের ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার তেলের দাম কিছুটা কমেছিল। এরপর আজ আবার তা বাড়ল।

মূলত সৌদি আরব ও রাশিয়ার সরবরাহ হ্রাসের কারণে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ওপেক যে তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার ওপর আবার রাশিয়া ও সৌদি আরব নিজে থেকে আরও উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে, যা চলতি বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত চলবে। এই বাস্তবতায় তেলের দাম বাড়ছে।

এর মধ্যে গত সপ্তাহে মস্কো নিজেদের অভ্যন্তরীণ বাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষার কথা বলে সাময়িকভাবে গ্যাসোলিন ও ডিজেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইউরোপের শীতকাল শুরুর ঠিক আগে আগে এই ঘোষণা বাজারে একধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে। কারণ, শীতের সময় ঘর গরম করার জন্য ইউরোপীয়দের বিপুল পরিমাণ জ্বালানির প্রয়োজন হয়। এই জ্বালানির সংকট ইউরোপের জন্য রীতিমতো অশনিসংকেত।

অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় তেলের খনির সংখ্যা আবার কমে ৫০৭-এ নেমেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর যা সর্বনিম্ন। শুক্রবার জ্বালানিপ্রযুক্তি কোম্পানি বেকার হিউজের সাপ্তাহিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি সপ্তাহে চীনের অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার কথা। আশা করা হচ্ছে, এই প্রতিবেদন থেকে ইতিবাচক খবর পাওয়া যাবে। যদিও বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাজারের যা পরিস্থিতি, তাতে তেলের দাম ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে যে পর্যায়ে ছিল, তার ওপরে যেতে দেওয়া হবে না। তেলের দাম এর ওপরে উঠে গেলে বাজারে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে জন্য বিনিয়োগকারীরাই দাম এর ওপরে যেতে দেবেন না।

ধারণা করা হচ্ছে, চীনের উৎপাদন খাত সেপ্টেম্বর মাসে আবার সম্প্রসারণের ধারায় ফিরবে। গোল্ডম্যান স্যাকসের বিশ্লেষকেরা বলছেন, পারচেজিং ম্যানুফ্যাকচারিং ইনডেক্স মার্চ মাসের পর এই প্রথম ৫০ ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ইতিবাচক খবর হলো, গত সপ্তাহে চীনের দৈনিক তেলের চাহিদা তিন লাখ ব্যারেল বেড়েছে। অবশ্য এর কারণ হলো, আন্তর্জাতিক আকাশ পরিবহন বেড়ে যাওয়ায় জেট ফুয়েলের চাহিদা বেড়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.