সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত বছরের ২৬ জুন সকাল ৬টা থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়েছে। বাকি ছিলো রেল যোগাযোগ। তার কাজও এগিয়ে গেছে। ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুতে শতভাগ রেললাইন বসানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে উন্মোচিত হবে যোগাযোগের নতুন দিগন্ত। সেতু দিয়ে চলবে ট্রেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত টানা ৪২ কিলোমিটার রেলপথ এখন দৃশ্যমান। আগামীকাল মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো এই পুরো পথে চালানো হবে গ্যাংকার।
প্রকল্প সূত্র বলেছে, রেললাইন বসে গেলেও খুঁটিনাটি অনেক কাজ বাকি। সেতুতে বসানো রেললাইনে এখনও ওয়েল্ডিংয়ের কাজ শেষ হয়নি। ফলে গ্যাংকার খুব আস্তে চালাতে হবে। তবু গ্যাংকার ঝাঁকি খাবে। যতটুকু পথে রেললাইন বসেছে তাতে ট্রেন চলতে অন্তত আরো তিন মাস লাগবে।
রেলের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রকল্পের অধীন প্রথমে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালানো হবে। এই রেলপথ চালু হলে আরও ছয়টি রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হবে। প্রাথমিক ভাবনায় রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, যশোরের বেনাপোল, খুলনা, রাজশাহীর ট্রেনও এই পথে চালানোর চিন্তা আছে। সে ক্ষেত্রে ভারতে যাওয়ার মৈত্রী ট্রেনও এ পথ ব্যবহার করবে ভবিষ্যতে।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার পুরো ৪২ কিলোমিটার পথে গ্যাংকার চালানোর পরিকল্পনা আছে। অনেক জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে এরই মধ্যে গ্যাংকার চালানো হয়েছে।’ এদিকে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রেললাইন বসানো হয়েছে। মাওয়া প্রান্ত থেকে ঢাকামুখী রেললাইন বসানোর কাজ শুরু হয়। শ্রীপুর, কেরানীগঞ্জ, পাগলা ও ডেমরা এলাকায় খণ্ড খণ্ডভাবে রেললাইন বসানো হয়েছে।
রেলওয়ের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা দিয়ে যশোরের সঙ্গে রেল নেটওয়ার্ক যুক্ত হবে। একই সঙ্গে ভাঙ্গা থেকে পাচুরিয়া-রাজবাড়ী সেকশনটি পদ্মা সেতু হয়ে সরাসরি ঢাকার সঙ্গে যুক্ত হবে।
বর্তমানে রেলপথে ঢাকার সঙ্গে খুলনার দূরত্ব ৪৬০ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু দিয়ে নতুন রেলপথটি চালু হলে দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার। এ ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে নতুন পথে নতুন রেলযাত্রী তৈরি হবে। দূরত্ব ও ভোগান্তি কমবে।