শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল, আঘাত হানতে পারে যখন

0
81
ঘূর্ণিঝড়
চলতি মাসের শুরুতে টানা বৃষ্টির পর দেশের তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। চলমান মৃদু তাপপ্রবাহ ৫৮ জেলায় বিস্তার লাভ করেছে, যা আরও বিস্তৃত হতে পারে। এরই মধ্যে দুই দিনের তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২০ মে’র পর সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির আশঙ্কা আছে। সেটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপের ধাপ পেরোতে পারে; যা শক্তিশালী হয়ে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে সেটা বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে কিনা তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
 
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের বিভিন্ন মডেল পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ২১ তারিখের পর দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। যেটি পরবর্তীকালে লঘুচাপে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আছে।’
 
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় হলে কোথায় আঘাত হানতে পারে এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। এটির গতিপ্রকৃতি এখন স্পষ্ট নয়। লঘুচাপ সৃষ্টির পর বলা যাবে।’
 
এদিকে ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, চলতি মাসের শেষের দিকেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়তে পারে শক্তিশালী এ ঘূর্ণিঝড়।
 
বঙ্গোপসাগরে ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়টির আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়েছে; যা আগামী ২০ মের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়টির অভিমুখ কিংবা গতিপথ কোনদিকে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম রাখা হয়েছে রেমাল। খবর দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের।
 
চার বছর আগে, অর্থাৎ ২০২০ সালের মে মাসেই ২০ তারিখে দেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বেশ বিধ্বংসী ছিল ঘূর্ণিঝড়টি। তবে সুন্দরবনের কারণে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিল দেশের উপকূল। এর আগে ২০০৯ সালে এই মে মাসেই ২৫ তারিখে সুন্দরবনে আঘাত হেনেছিল প্রলয়ঙ্করী আইলা।
 
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, রেমালও আম্ফান ও আইলার মতো বিধ্বংসী হতে পারে। তবে এটির শক্তি কতটুকু; শেষ পর্যন্ত সুপার সাইক্লোনে রূপ নেবে কি না, তা জানতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
 
ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী— আগামী ২০ মে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। সেটি সোজা উত্তর দিকে শক্তিবৃদ্ধি করবে। ২৪ মে এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। ২৫ মে সন্ধ্যার পর ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসতে পারে।
 
তবে আবুল কালাম বলেন, এখনো লঘুচাপ সৃষ্টি হয়নি। তাই আগে থেকেই এটির গতিপ্রকৃতি বলা ঠিক হবে না। অনেক সময় সাইক্লোনে রূপান্তরিত হওয়ার পর সেটির গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন হয়। তাই এটি এখন উপকূলের কোন অঞ্চলে বা কোন দেশে আঘাত হানবে তা বলা উচিত নয়।
 
এর আগে গত বছরের ১৪ মে প্রতি ঘণ্টায় ১৭৫ মাইল পর্যন্ত বেগে বাংলাদেশ উপকূলে সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় আঘাত ‘মোখা’ হেনেছিল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.