অ্যাপে বান্ধবীকে বিক্রি করলেন বান্ধবী, অতঃপর…

0
99
অভিযুক্ত সামিয়া (সংগৃহীত ছবি)
বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি বাসা থেকে বের হলেই আশপাশের কিছু মানুষ আমার দিকে কৌতূহল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। একদিন উত্তরায় রিকশায় যাচ্ছিলাম, এ সময় এক অপরিচিত লোক আমার নাম ধরে ডেকে চিৎকার করে বলেন, এই মেয়ে আমার সঙ্গে কেন প্রতারণা করলে? আমার কাছে রুম ডেটের কথা বলে অগ্রিম টাকা নিয়ে তারপর আমাকে ব্লক করে দিলে। ওই ব্যক্তির কথা শুনে আমি রীতিমতো অবাক। এরপর যখন পরিচিতরা আমাকে ডেটিং অ্যাপস ট্যানট্যানের একটি আইডির স্ক্রিনশট পাঠায়। তখন আমি বিষয়টি বুঝতে পারি। আমার ছবি ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।’
 
এভাবেই নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বর্ণনা দিলেন রাজধানীর উত্তরার একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।
 
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, আমার কাছের এক বান্ধবী মোছা. সামিয়া ডেটিং অ্যাপস ট্যানট্যানে আমার ছবি ব্যবহার করে এমন প্রতারণা করেছেন। ওই অ্যাপে মাহি নামের একটি অ্যাকাউন্টে ব্যবহার করা হয়েছে আমার ছবি। সেই ডেটিং অ্যাপসের অ্যাকাউন্ট থেকে রুম ডেট করার নামে বহু মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা।
 
তিনি বলেন, সামিয়া এসব অ্যাপসে নিজের ছবি ব্যবহার করে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। রুম ডেটের কথা বলে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার; এমনকি সুযোগ বুঝে লাখ টাকাও নিয়েছে কারও কারও কাছ থেকে। ভুয়া জন্মদিনের কথা বলে নিয়েছে দামি উপহার। এমনকি বাসার জন্য মাছ, মাংসসহ বাজারও নিয়েছে।
 
সামিয়ার ছবি যখন সবাই চিনে ফেলেছে তখন আমার ছবি ব্যবহার শুরু করে জানিয়ে ওই শিক্ষার্থী জানান, রুম ডেটের জন্য বিকাশে টাকা নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ব্লক করে দেয়। অভিযুক্ত সামিয়ার এসব অপকর্মের এবং বিভিন্ন পুরুষের কাছ থেকে টাকা লেনদেনের অডিও ও মেসেজের তথ্য রয়েছে । একটি অডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, তুমি তো শুধু মাছ আর গোশত কিনে দিলে। তেল, লবণ কেনার জন্য আরও ৫ হাজার টাকা পাঠাও। তারপর রুম ডেটে যাব।
 
তিনি জানান, বান্ধবী সামিয়ার হেনস্তার শিকার হয়ে আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। তার নামে থানায় জিডি করছি। আমি থানায় অভিযোগ করার পরই নিজের ফেসবুক আইডি, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভ করে দিয়েছে সামিয়া।
 
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। আমি রাস্তাঘাটে বের হতে পারছি না। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি। বান্ধবী হয়ে আমার এত বড় ক্ষতি করল! আমি এই ঘটনার বিচার চাই। তার দ্বারা যেন অন্য কেউ আর প্রতারিত না হয়।
 
অভিযুক্ত সামিয়ার মোবাইল ফোনে কল দিলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করলেও কোনো উত্তর মেলেনি।
 
ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী বলেন, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.