লেখক, শিক্ষক সুফিয়া খাতুন আর নেই

0
124
২৩ বছর শিক্ষকতা করেছেন সুফিয়া খাতুন। যুক্ত ছিলেন সমাজসেবায়। ছবি: সংগৃহীত
২৩ বছর শিক্ষকতা করেছেন সুফিয়া খাতুন। যুক্ত ছিলেন সমাজসেবায়। ছবি: সংগৃহীত

 রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডে বেলা দেড়টার দিকে নিজ বাড়িতে সুফিয়া খাতুনের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বনানী কবরস্থানে স্বামী এ কে এম ওয়াঝিহ উল্লাহ্-এর কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।  তিনি চার ছেলে, এক মেয়ে, নাতিনাতনি, অসংখ্য শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।

সুফিয়া খাতুনের জন্ম  ময়মনসিংহে, খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রের তীরে। তাই আত্মজীবনী ‘জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে’ বইতে নদীর মতো প্রবহমান জীবনের গল্প তিনি  তুলে ধরেছেন। বইটির সময়কাল ১৯৩০ থেকে ২০০৩ সাল। এই বইতে একজন সাধারণ নারীর অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প রচিত হয়েছে।

দেশ ও বিদেশের নানা স্থানে জীবন কেটেছে তাঁর। শৈশব ও কৈশোরে বাবার, বিয়ের পর সরকারি কর্মকর্তা স্বামীর চাকরিসূত্রে এবং পরবর্তী জীবনে ছেলেমেয়েদের জন্য তিনি হেঁটেছেন পৃথিবীর পথে পথে।

বইটি পড়তে পড়তে পাঠকের চোখের সামনে কখনো ভেসে উঠবে ব্যারাকপুর, কলকাতা, কৃষ্ণনগর, মুর্শিদাবাদ থেকে শুরু করে কুমিল্লা, পাবনা, বরিশাল, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ দেশের নানা স্থান। আবার কখনো তাঁদের নিয়ে যাবে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় লেখকের জীবনের অতিবাহিত দিনগুলোতে। তিলোত্তমা ঢাকা শহর প্রায় গড়ে উঠতে দেখা যায় এই আত্মজীবনীতে।

মুসলিম সমাজে নবজাগরণ, সমাজে হিন্দু-মুসলমান সহাবস্থান ও পরবর্তী সময়ে দাঙ্গা, কলেরা মহামারি, দুর্ভিক্ষ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, দেশভাগ, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, সামরিক শাসন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা-প্রায় সব ঘটনারই সাক্ষী সুফিয়া খাতুন।

সুফিয়া খাতুনের বাবা, মা, মাতামহী, দাদা, জীবনসঙ্গী, বাল্যকালের গৃহশিক্ষক কফিলউদ্দীনসহ সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিচরণ করেছে আত্মজীবনীটির পৃষ্ঠাজুড়ে। উঠে এসেছে মুনীর চৌধুরীসহ বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর হৃদ্যতার সম্পর্কের নানা প্রান্ত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.