রিজার্ভ নিয়ে চিন্তিত, উৎকণ্ঠিত নই

0
101

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে অহেতুক দুশ্চিন্তার দরকার নেই। তবে সতর্ক পাহারার দরকার রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন এমন মন্তব্য করেছেন। রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এফডিসির একটি মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ফরাসউদ্দিন দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর কথা বলেন।

তিনি বলেন, রিজার্ভের মতো অর্থনীতির স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে অন্যায় বিতর্ক হচ্ছে। যারা বলছেন তিন মাসের মধ্যে রিজার্ভ শুকিয়ে যাবে, তারা কি মনে করেন, তিন মাসে কোনো রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স আসবে না? তাঁর ভাষায়, ‘রিজার্ভ নিয়ে আমি চিন্তিত, তবে উৎকণ্ঠিত নই। সমস্যা মনে করছি, সংকট নয়।’
তাঁর মতে, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সমতাধর্মী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিপথে গেছে। এর ফলে বৈষম্য বেড়েছে। ধনতান্ত্রিক বাজার ব্যবস্থাকে কিছু লোক নিজেদের কবজায় নিয়ে নেয়, যাদের বঙ্গবন্ধু ‘চাটার দল’ বলেছেন।
সাবেক গভর্নর আরও বলেন, রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রণোদনা না দিয়ে খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকে ডলারের পার্থক্য ঘােচাতে পারলে কালোবাজারি বন্ধ হবে। টাকা-ডলার বিনিময় হার একটা থাকতে হবে।  তিনি মনে করেন, অর্থ পাচার বন্ধ করতে পারলে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হবে। কর সংগ্রহ বাড়াতে তিনি করের নীতি প্রণয়ন অংশে এনবিআরকে না রেখে শুধু বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন। সক্ষম ব্যক্তিরা, যারা কর দেন না কিংবা ফাঁকি দেন, তাদের  কাছ থেকে আদায় বাড়ানোর সুপারিশ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে না।  এ দেশে কোনো রাজাপাকসে নেই। শ্রীলঙ্কা মূল্যস্ফীতি বেশ কমিয়ে এনেছে। বাংলাদেশেও কমানো সম্ভব। এর জন্য সরকারের খাদ্যের মজুত বাড়াতে হবে। বাজারে সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। তিনি বলেন, সরকারি ঋণ জিডিপির তুলনায় অনেক কম। ঋণ পরিশোধ যাতে খুব বেশি না বাড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজন হলে দ্বিপক্ষীয় কিছু ঋণের পরিশোধ সময়সূচি বাড়িয়ে নিতে হবে।

ফরাসউদ্দিন  বলেন, বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করেও অনেকে পার পেয়ে যাচ্ছে। সামান্য ঋণের জন্য কৃষককে জেলে নেওয়া হয়, অথচ অনেকে ১০-২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে ফেরত দেন না। তারা সব সরকারের আমলে ডানে-বাঁয়ে বসে।
অর্থনৈতিক সুরক্ষায় অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির কৌশল নিয়ে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট নামে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় তেজগাঁও কলেজ দলকে পরাজিত করে বিজয়ী হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কর দেওয়ার প্রবণতা কম। প্রভাবশালীদেরই কর ফাঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। কর ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের অভাবে প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.