রিকশাচালককে চড়থাপ্পড় দেওয়া সেই আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

0
113
রিকশাচালককে মারধরের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল যশোর আদালতের সামনে

আইনজীবীদের প্রতীক কালো গাউন পরা অবস্থায় রিকশাচালককে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য আরতি রানী ঘোষ। আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু মোর্তজা স্বাক্ষরিত নোটিশ আজ মঙ্গলবার সকালে আরতি রানীর বাড়িতে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে আবু মোর্তজাবলেন, সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আইনজীবীদের গাউন পরা অবস্থায় একজন রিকশাচালককে প্রকাশ্যে মারধর করা আইনজীবীদের জন্য মর্যাদাহানিকর। এ বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য আরতি রানী ঘোষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ওই নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত রোববার দুপুরে যশোর আদালতের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কে এক রিকশাচালককে মারধরের অভিযোগ ওঠে আইনজীবী আরতি রানী ঘোষের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার ভিডিও গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য গতকাল থেকে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আইনজীবী আরতি রানী ঘোষকে পাওয়া যায়নি। কেউ তাঁর ফোন ধরেননি।

রিকশাচালকের কলার ধরে আইনজীবীর চড়থাপ্পড়, ছড়িয়ে পড়েছে ভিডিও

এদিকে ঘটনার বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক আইনজীবী  বলেন, ফেসবুকে আরতি রানী ঘোষের চড়থাপ্পড় দেওয়া ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছে। অথচ এর আগে কী ঘটেছে, তা ওই ভিডিওতে নেই। তাঁরা চারতলার ওপর থেকে দেখেছেন, রিকশাচালক একজন নারী আইনজীবীকে অন্যায়ভাবে রিকশা দিয়ে জোরে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেন। এতে রাস্তার ওপর পড়ে গিয়ে আরতি রানী আহত হন। রাগে তিনি রিকশাচালককে দু–একটা চড়থাপ্পড় দিয়েছেন—এটা সত্য। কিন্তু একজন নারীকে রিকশাচাপা দেওয়ার দৃশ্য কেউ দেখল না! অথচ সামাজিকভাবে আরতি রানীকে হেয় করা হচ্ছে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কালো গাউন পরিহিত এক আইনজীবী রিকশাচালকের জামার কলার ধরে চড়থাপ্পড় দিচ্ছেন। মারতে মারতে তাঁকে রিকশার চাবি নিয়ে পৌরসভায় যেতে বলেন। জামার কলার ধরে বারবার রিকশাচালককে পৌরসভায় নিয়ে গিয়ে লাইসেন্স বাতিল করার হুমকিও দিতে দেখা যায়। এ সময় রিকশাচালক হাত উঁচু করে মাফ চান। এরপরও ওই আইনজীবীকে চড়াও হতে দেখা যায়। এ সময় সড়কে পথচারীরা তাঁকে থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে এক নারী এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করলে ক্ষান্ত হন তিনি। এরপর ওই চালক তাঁর রিকশা নিয়ে চলে যান।

ঘটনার সময় যশোর প্রেসক্লাবের অফিস সহকারী মীর রবিউল ইসলাম ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। রিকশাচালককে মারতে দেখে তিনি এগিয়ে গিয়ে তাকে বাঁচানো চেষ্টা করেন। রবিউল ইসলাম বলেন, ওই নারী আইনজীবীকে বারবার অনুরোধ করার পরও তিনি কারও কথা শোনেননি। রিকশাচালককে তিনি মেরেই যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে সড়কে অবস্থান করা পথচারীরা প্রতিবাদ করলে তিনি কিছুটা শান্ত হন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.