রাশিয়া ও ইরানের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গভীর হচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে। রাশিয়াকে ইরান শত শত ড্রোন পাঠিয়েছে এবং সেগুলো ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখ করে ওয়াশিংটন দাবি করেছে, রাশিয়ায় ইরানের এই ড্রোন উৎপাদনে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করছে।
গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
নতুন করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হোয়াইট হাউস বলছে, ইরানে তৈরি হওয়া ড্রোন বা চালকবিহীন উড্ডয়ন যানগুলো (ইউএভি) কাস্পিয়ান সাগর হয়ে রাশিয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। রুশ বাহিনী সেগুলো ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় কিয়েভে হামলা চালাতে এবং ইউক্রেনের জনগণকে ভয় দেখাতে রাশিয়া ইরানের তৈরি ইউএভি ব্যবহার করছে। রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক গভীর হচ্ছে।’
জন কিরবি আরও বলেন, রাশিয়াতেই যেন ইরানি ড্রোন তৈরি করা যায়, তা নিশ্চিত করতে তেহরানের সঙ্গে কাজ করছে মস্কো। এ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
একটি ড্রোন কারখানা গড়তে ইরানের কাছ থেকে রাশিয়া প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করছে—যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন তথ্য আছে দাবি করে হোয়াইট হাউসের এই মুখপাত্র বলেন, আগামী বছরের শুরুর দিকে এটি পুরোদমে চালু হতে পারে।
জন কিরবির ভাষ্য, রাশিয়ার আলাবুগা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ড্রোন উৎপাদনের কারখানাটি তৈরির কথা ভাবছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্র ওই এলাকার স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কিরবি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্র, ইলেকট্রনিকস, আকাশ প্রতিরক্ষাসহ নজিরবিহীন প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ব্যাপারে ইরানকে প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। এটি পূর্ণমাত্রার প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, যা ইউক্রেন, ইরানের প্রতিবেশী দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য হুমকির কারণ হবে।
ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন বলছে, রাশিয়ায় ইরানি ড্রোন পাঠানোর মধ্য দিয়ে ২০১৫ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া একটি প্রস্তাবের লঙ্ঘন হয়েছে। ইরানের পারমাণবিক চুক্তিকে কেন্দ্র করে ওই প্রস্তাব পাস হয়েছিল।
২০১৫ সালে পাস হওয়া জাতিসংঘ প্রস্তাবের আওতায় ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল।
ইউক্রেন ও পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোর দাবি, ওই প্রস্তাব অনুযায়ী ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র এবং এ-সংক্রান্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ড্রোনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সামরিক ব্যবস্থা রপ্তানি করা ও কেনার বিষয়টিও এর আওতার মধ্যে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের ব্যাপারে জাতিসংঘের ইরানি ও রুশ মিশন কোনো মন্তব্য করেনি।