রাজবাড়ীতে রাজমিস্ত্রি সজল শেখকে (৩২) কুপিয়ে হত্যা মামলায় এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে রাজবাড়ীর জেলা ও দায়রা জজ মোছা. জাকিয়া পারভীন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম সাদ্দাম শেখ। তিনি রাজবাড়ী সদরের মূলঘর ইউনিয়নের পশ্চিম মূলঘর গ্রামের বাসিন্দা ও নিহত সজলের স্ত্রী আসমা বেগমের ভাই। নিহত সজল শেখ একই গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সজল শেখের সঙ্গে প্রতিবেশী বাবু শেখের মেয়ে আসমা বেগমের বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে দুই সন্তান আছে। তবে সজল ও আসমার মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহ চলছিল। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেকবার সালিসও হয়েছে। তবে এতে কোনো সমাধান হয়নি। রাজমিস্ত্রির কাজের পাশাপাশি সজল অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করতেন। ২০১৪ সালের নভেম্বরে জলিল বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি সজলকে ইজারার ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেন। এই টাকা দিয়ে আরেকজনের কাছ থেকে জমি ইজারা নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন সজল। কিন্তু আসমা তাতে বাধা দেন। পরে আসমা জমি ইজারার টাকা তাঁর মায়ের কাছে দেন। এ নিয়ে একই বছরের ২০ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সজল তাঁর স্ত্রীকে চড়–থাপ্পড় মারেন।
পরে আসমা বাবার বাড়িতে গিয়ে সজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এতে আসমার বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে সজলকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে সজলকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনিত হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। পরের দিন ঢাকায় সজল মারা যান। এ ঘটনায় সজলের ভাই রহমান শেখ বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করেন এবং অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করেছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) উজির আলী শেখ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রায়ে বাদীপক্ষ সন্তুষ্ট।