রাখাইনের রাজধানীর কাছে পুলিশ স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি

0
68
পুলিশ স্টেশন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করে আরাকান আর্মি। ছবি: ইরাবতী

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইন রাজের রাজধানী সিতওয়ের কাছে পোনাজিউন শহরের একটি পুলিশ স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জান্তা বাহিনীকে পিছু হটিয়ে ওই পুলিশ স্টেশন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করে আরাকান আর্মি। খবর দ্য ইরাবতীর

পোনাজিউন শহরটি ইয়াঙ্গুন-সিতওয়ে সড়কের পাশে অবস্থিত। এটি রাখাইনের রাজধানী থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তরের একটি শহর। ওই শহরে জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে আগেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল।

এর আগে সম্প্রতি সিতওয়ের কাছাকাছি পাকতাও নামের আরেকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি। রাখাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে সিতওয়ে এলাকায় নিয়োজিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কমান্ডারকে আত্মসমর্পণ করার বা পরাজয় স্বীকার করে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি সিতওয়ে শহরের এক বাসিন্দা নির্বাসিত মিয়ানমারের নাগরিকদের মাধ্যমে পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ইরাবতীকে বলেছেন, আরাকান আর্মি জান্তা বাহিনীর ওপর আক্রমণ করবে–এ ভয়ে সিতওয়ের অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা এলাকা ছেড়েছেন। এর মধ্যে জান্তা প্রশাসনের অনেকেই রয়েছেন।

ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জান্তার শক্তিশালী অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে রয়েছে পোনাজিউন, রাথেডং, বুথিডং ও মংডু শহর।

আরাকান আর্মি দাবি করেছে, এর আগে গত বৃহস্পতিবার সিতওয়ে, পোনাজিউন, রাথেডং, বুথিডং এলাকার বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে শুরু করে জান্তা।

এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার জান্তার নবম সেন্ট্রাল মিলিটারি ট্রেনিং স্কুলে হামলা করে আরাকান আর্মি। এটি মিনবিয়া শহরে জান্তার শক্ত একটি ঘাঁটি। গত শনিবার থেকে এই ঘাঁটি লক্ষ্য করে তাদের হামলা অব্যাহত ছিল। মূল ঘাঁটিতে আঘাত হানার আগেই ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সুরক্ষায় নিয়োজিত তিনটি চৌকি দখল করে নেয় তারা।

গত বৃহস্পতিবার জান্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে ওয়াই ১২ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে রাখাইনের উপকূলীয় শহর রামরিতে বোমাবর্ষণ করা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সামরিক একটি নৌযানে রাখাইন আর্মি হামলা চালানোর পর ওই বোমাবর্ষণ শুরু হয়। সেনাদের রসদ জোগাতে ওই নৌযানটি উপকূলের দিকে যাচ্ছিল। আরাকান আর্মির আক্রমণের পর সেটি পিছু হটে।

আরাকান আর্মি হচ্ছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য। গত বছরের ২৭ অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তরাঞ্চলের শান রাজ্যে ১ হাজার ২৭টি হামলা চালায় ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। এতে ২০টি শহর ও চীনের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ পথের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। জানুয়ারি মাসের শুরুতে চীনের মধ্যস্থতায় জান্তা ও ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। এর পর থেকে সেখানে অভিযান বন্ধ রাখে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স।

গত ১৩ নভেম্বর থেকে রাখাইন রাজ্যে অভিযান জোরদার করে আরাকান আর্মি। সেখানে জান্তার ১৭০টি শক্ত ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। এখন পর্যন্ত রাখাইন ও চিন রাজ্যের সাতটি শহরের নিয়ন্ত্রণ এসেছে আরাকান আর্মির হাতে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.