‘মুরগি কিনেছি দেড় মাস আগে’

0
101
দেড় মাস আগে ব্রয়লার মুরগি কিনেছিলেন নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করা মো. আবুল কাশেম। ব্রয়লার মুরগি দাম এখন হাতের নাগালের বাইরে। তাই দুই মেয়ের জন্য মুরগির বদলে ডিম কিনছেন তিনি। যদিও ডিমের দামও বাড়তি। আজ শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামের কর্নেল হাট কাঁচাবাজারে

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবমতে, গত এক মাসে ব্রয়লার মুরগিতে দাম বেড়েছে প্রায় ৫২ শতাংশ। বাজার ঘুরে দেখা গেল, জানুয়ারি মাসে ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি বাজারভেদে বর্তমানে প্রতি কেজি ২১০ থেকে ২৩০ টাকা। ২৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া সোনালি মুরগির দাম বর্তমানে ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা। এ ছাড়া মুরগির প্রতি ডজন ডিম পাওয়া যায় এখন ১৩৫-১৪৫ টাকায়।

বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কথা হয় বাজার করতে আসা মো. মিজানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহে বাজারে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। তবে মুরগির দাম এভাবে বেড়ে যাওয়া সত্যিই অস্বাভাবিক। মা ও চার ভাইবোনের সংসারে বাবাই একমাত্র আয়ের উৎস। বাসাভাড়া দিয়ে যে টাকা থাকে, তার সঙ্গে নিজের টিউশনের টাকা মিলিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। সামনে রোজায় দাম হাতের নাগালে আসবে, এমন প্রত্যাশা করেন তিনি।

মাংসের পাশাপাশি মাছের দামও বাড়তি বাজারে

মাংসের পাশাপাশি মাছের দামও বাড়তি বাজারে

মুরগির অস্বাভাবিক দামের বিষয়ে বিক্রেতারা বলছেন, দুই সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকার ওপরে। তার মূল কারণ মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। এক কেজি খাদ্যের দাম এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকার মধ্যে। দুই মাস আগেও তা ৫৮ থেকে ৬০ টাকা ছিল। আবার শীতে রোগবালাইয়ের কারণে অনেক মুরগি মারা গেছে। তাই পাইকারি বাজারে মুরগি বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। দাম বাড়ার কারণে আগের তুলনায় মুরগি বিক্রি হচ্ছে কম বলে জানালেন বিক্রেতারা।

মুরগির পাশাপাশি বাজারে গরুর মাংসের দামও বাড়তি। হাড়সহ গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকা। আর হাড় ছাড়া গরুর মাংস ৮০০-৮৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজিতে। মাছবাজারে আকারভেদে তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২৪০, রুই ১৮০ থেকে ২৫০ ও কাতলা ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ-মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের অনেক ক্রেতাই সবজির দিকে ঝুঁকছেন

মাছ-মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের অনেক ক্রেতাই সবজির দিকে ঝুঁকছেন

অন্যান্য নিত্যপণ্যের মধ্যে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০৮ থেকে ১১২ টাকায়। দেশি মসুর ডাল ১৩৫-১৪০, মোটা দানার মসুর ডাল ১০০-১১০, মানভেদে ছোলা ৮২ থেকে ৯৫, বোতলজাত সয়াবিন (১ লিটার) ১৮০ থেকে ১৯০, পেঁয়াজ ৩৫-৪০, আকারভেদে রসুন ১১০ থেকে ১৪০, প্যাকেটজাত আটা ৬৫ থেকে ৬৮ ও প্যাকেটজাত ময়দা ৭২ থেকে ৭৬ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছ ও মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় সবজির দিকে ঝুঁকছেন অনেক ক্রেতা। বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকায়। এ ছাড়া কাঁচা মরিচ ১১০ থেকে ১২০, শিম ৩০ থেকে ৩৫, বেগুন ২০ থেকে ২৫, আলু ২০ থেকে ২৫, মিষ্টিকুমড়া ২৫-৩০ ও টমেটো ১৫ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রানা দেবনাথ বলেন, রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে বাজার তদারক করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে চকবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারে দামের অসংগতি পাওয়ায় সতর্ক করা হয়েছে। বাজারে অভিযান চলমান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.