মানিকগঞ্জে দুই মাস বেতন পান না ২৭ শিক্ষক-কর্মচারী

0
159

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি চেকে সই না করায় বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা তোলা যাচ্ছে না।

এতে দুই মাস ধরে বেতন ও ভাতা বন্ধ আছে বিদ্যালয়টির ২৭ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও কমিটির অন্য সদস্যরা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

গত ৪ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে দেওয়া তাঁদের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনায় বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. মমিনুল ইসলাম একক সিদ্ধান্তে বিভিন্ন সময় শিক্ষক ও কর্মচারীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। তাঁদের তিনি সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেন। মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে কমিটির সভাপতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলে শিক্ষক ও কর্মচারীদের তিনি ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১২ মার্চ সভাপতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসফর, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ক্লাস ফি, ভর্তি ফরম বিক্রিসহ অন্যান্য খাতের ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং রেজল্যুশন খাতা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে চাপ প্রয়োগ করে নিয়ে নেন। পরে তা ফেরত চাইলে তাঁদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আতোয়ার রহমান বলেন, ওই টাকা এখনো ফেরত দেননি সভাপতি। টাকা ফেরত চাইলে হুমকি দেন। বিদ্যালয়ে ২২ জন শিক্ষক ও ৫ জন কর্মচারী আছেন। সভাপতি চেকে সই না করায় গত মার্চ ও এপ্রিল মাসের বেতন পাননি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ ছাড়া গত পবিত্র ঈদুল ফিতর ও বৈশাখী ভাতাও পাননি। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা।

এমন পরিস্থিতিতে গত ৪ এপ্রিল সভাপতির অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে সভা করেন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্য সদস্যরা। সভায় সবার সম্মতিতে সভাপতির প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। ৯ এপ্রিল মমিনুল ইসলামকে সভাপতির পদ থেকে বরখাস্ত করার দাবিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তাঁরা।

বেতন-ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে দাবি করছেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি চেকে সই না করায় ব্যাংক থকে টাকা তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে তাঁরা দুই মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতি চললে আগামী ঈদুল আজহাতেও বেতন-ভাতা পাবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কা আছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য আজ রোববার সকালে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মমিনুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তিনি কল ধরেননি।

ইউএনও মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছেন। এটি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.