করপোরেশনটির আয়ের বড় একটি উৎস এখন স্থাপনা ভাড়া। নিজেদের কার্যালয়ের বড় অংশ ভাড়া দিয়েছে তারা।
তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে ১০টি সাগরে মাছ ধরার ট্রলার উপহার দিয়েছিল। সেগুলো দিয়ে বঙ্গোপসাগরে ‘প্রথমবারের’ মতো বাণিজ্যিকভাবে মাছ ধরা শুরু করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। তারা সাগরের মাছ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করত।
সেই ১০টির মধ্যে এখন ৮টি ট্রলার আছে। এর মধ্যে ৩টি অকেজো। বাকি ৫টি বহু আগে ভাড়া দিয়েছে বিএফডিসি, যার মাধ্যমে সাগরে মাছ ধরা থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছে তারা।
সাগরে মাছ ধরা যেমন বন্ধ, তেমনি মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে মাছ আসা কমছে। কমছে বরফ উৎপাদন। করপোরেশনের আওতাধীন প্রক্রিয়া কেন্দ্রে রপ্তানির জন্য মাছ প্রক্রিয়াকরণও কমতির দিকে। এদিকে তারা ঢাকায় মাছ বিক্রিতে যুক্ত হয়েছে। মাছ ধরা ট্রলার নির্মাণ ও মেরামত কারখানা বা ডকইয়ার্ডের পরিধি বাড়িয়েছে।
মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন মুনাফায়ও আছে। সরকারের কাছ থেকে তাদের ভর্তুকি নিতে হয় না। অবশ্য যে বিস্তৃত কাজের উদ্দেশ্যে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা পূরণ হচ্ছে না বলেই মনে করেন মৎস্য খাতের অংশীজনেরা।
১৯৭৩ সালের আইনে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের লক্ষ্য হিসেবে বলা হয়েছে, মৎস্যসম্পদ ও মৎস্যশিল্পের উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ, মৎস্যশিল্প স্থাপন, মৎস্য আহরণের জন্য ইউনিট প্রতিষ্ঠা, মৎস্যসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের উদ্দেশ্যে অধিকতর সমন্বিত পদ্ধতির উন্নয়ন, মৎস্যশিল্প ও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে অগ্রিম ঋণ প্রদান, মৎস্যসম্পদের জরিপ ও অনুসন্ধানের ব্যবস্থা নেওয়া, মৎস্য শিকার, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের পদ্ধতি সম্পর্কিত গবেষণা, মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির জন্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন ইত্যাদি।
এসব লক্ষ্য কতটা পূরণ হয়েছে, তা নিয়ে কথা বলতে গত ২৭ মার্চ রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিএফডিসির কার্যালয়ে গেলেও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কাজী আশরাফ উদ্দীনের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পাওয়া যায়নি। তিনি পরিচালক (অর্থ) মো. ফজলুল হকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। ফজলুল হক বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে চাননি।
সম্পদমূল্য ১,১০০ কোটি টাকা
মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৪ সালে। তখন নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন। স্বাধীনতার পর এর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন। ২০২০ সালের জুনের এক নিরীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, বিএফডিসির স্থাবর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ১০ কোটি টাকা। আরও প্রায় ৯০ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।
বিএফডিসির আয়ের বড় উৎস ভূমি, ভবন, গুদাম ও ডকইয়ার্ড ভাড়া দেওয়া, মাছ বিক্রি ও মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে পাওয়া অর্থ, পানি বিক্রি, ব্যাংকে জমা অর্থের বিপরীতে সুদ ইত্যাদি। ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিজেদের প্রধান কার্যালয়ের একটি বড় অংশ ভাড়া দিয়েছে তারা।
সংস্থাটির বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে তারা মুনাফা করেছে ১১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটিতে জনবল রয়েছে ২৮৮ জন। ৪৪৩টি পদ শূন্য।
মাছ আসা কমছে
বিএফডিসির বড় কাজ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পরিচালনা করা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের ১৭টি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্র করা হয়েছে মুক্ত জলাশয় থেকে ধরা ও চাষের মাছ কেনাবেচা, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়া করার জন্য। কার্যত এগুলো মাছের আড়ত। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলো মৎস্যজীবীদের কাছে ভাড়া দেয় করপোরেশন। মাছ অবতরণ, সংরক্ষণ ও পাইকারি বাজারের কার্যক্রমে সরাসরি করপোরেশনের কর্মীদের সম্পৃক্ততা থাকে না। অবতরণ কেন্দ্রে থাকা বরফ কল পরিচালনা ও অফিসের কার্যক্রমে কিছু জনবল নিয়োজিত থাকে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিএফডিসির আটটি অবতরণ কেন্দ্র ছিল। ওই অর্থবছরে এসব কেন্দ্রে ২৬ হাজার ১৭৮ টন মাছ অবতরণ করা হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে অবতরণ কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে হয় ১৭। কিন্তু মাছ অবতরণ কমে দাঁড়ায় ২৪ হাজার টনে।
বিএফডিসির মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সাতটি গত পাঁচ বছরের মধ্যে নির্মিত হয়েছে। করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, চারটি অবতরণ কেন্দ্র এখনো চালু হয়নি। এর মধ্যে একটি হলো সুনামগঞ্জ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, এটি নির্মাণের কাজ ২০১৮ সালে শুরু হয়। শেষ হয় ২০২১ সালের জুন মাসে। কিন্তু এখনো চালু হয়নি।
কাজ শুরু করতেই ৫০ বছর পার
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ওয়েজখালী এলাকায় সুরমা নদীর তীরে এক একর জমির ওপর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৯ কোটি টাকা। গতকাল শনিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক সড়কের পাশে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটির ভেতরে নিলাম ছাউনি, মোড়কজাতকরণ কেন্দ্র, আড়ত, বরফকল, অফিস ও ডরমিটরি এবং বিদ্যুতের উপকেন্দ্র রয়েছে। এগুলো খালি পড়ে আছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আরও বলেন, কেন্দ্রটি চালুর জন্য কয়েক দফা মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁরা আসার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে আসেননি। ব্যবসায়ীরা না আসায় কার্যক্রম শুরু হয়নি। কাছেই আরেকটি মাছের আড়ত রয়েছে।
অবতরণ কেন্দ্রের ডরমিটরিতে পাওয়া যায় অফিস সহায়ক অরুণ চাকমাকে। তিনি জানান, অবতরণ কেন্দ্রে তিনি ছাড়া একজন বরফকল অপারেটর এবং দুজন নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। ব্যবস্থাপক যোগ দেবেন আগামী মাসে।
পিরোজপুরের পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, পটুয়াখালীর মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, আড়তদারেরা যেতে চান না বলেই সেগুলো চালু করা যাচ্ছে না। আরও কিছু সমস্যা রয়েছে।
পটুয়াখালীর আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, লক্ষ্মীপুরের রামগতি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র চালু হলেও ভালো চলছে না। এসব জায়গায় আগে থেকেই বেসরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র রয়েছে, সেগুলোতেই মানুষ বেশি মাছ নেয়।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বিএফডিসির একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র রয়েছে। নাম ঢাকা মহানগর আধুনিক মৎস্য বিপণন সুবিধাদি কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে মাছ আনার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ ব্যাপক।
এই সুযোগে ইজারাদার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দেননি বলেও অভিযোগ রয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অবতরণ কেন্দ্রটিতে গেলে কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী বলেন, কেন্দ্রটির আগের ইজারাদার প্রায় ৭০ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা করে জামানত নিয়েছিলেন। তা আর ফেরত দেননি। নতুন ইজারাদারও জামানত বাবদ টাকা নিচ্ছেন।
কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা দাবি করেন, তাঁদের চুক্তি ইজারাদারের সঙ্গে। ইজারাদারকে জামানতের টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই। কেউ দিলে দায় তাঁর। অবশ্য আল-মদিনা নামের একটি মাছের আড়তের মালিক মো. মনির বলেন, ‘আমরা অগ্রিম টাকা না দিলে তো জায়গা পাই না।’
কাপ্তাই হ্রদকে একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র হিসেবে ধরে বিএফডিসি। এই হ্রদে তারা মাছের পোনা ছাড়ে। তদারকি করে। জেলেদের মাছ ধরার অনুমতিও দেয় তারা। এর বিনিময়ে মাছের দামের একটি অংশ করপোরেশন পায়। যেমন বড় কাতলা মাছের প্রতি কেজিতে করপোরেশন পায় ৪০ টাকা। উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২০ হাজার টনের কিছু বেশি মাছ ধরা হয়েছে।
মাছ প্রক্রিয়াকরণ কমছে
করপোরেশনের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোর চারটিতে মাছ প্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা আছে। এই সুবিধা রাখা হয়েছে মাছ প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানির জন্য। কর্মকর্তারা জানান, দুটি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র বহু বছর ধরে অচল—একটি নারায়ণগঞ্জে, অন্যটি বাগেরহাটের মোংলায়। দুটি সচল আছে—এর একটি চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে, আরেকটি কক্সবাজারে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার টন মাছ প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করেছে বিএফডিসি। সর্বশেষ অর্থবছরে তা নেমেছে ৮৫ হাজার টনে।
কর্মকর্তারা বলছেন, কক্সবাজারে প্রক্রিয়াকরণ শেষে শুধু চীনে মাছ রপ্তানি হয়। প্রক্রিয়াকরণের অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানির মতো মান রক্ষা করা যায় না। মাছ প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানির প্রায় পুরোটাই বেসরকারি খাতে হয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ মাছ ও সমজাতীয় পণ্য রপ্তানি করে প্রায় ৫৩ কোটি মার্কিন ডলার আয় করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি।
হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আশরাফ হোসেন বলেন, বিএফডিসি মাছ প্রক্রিয়াকরণ করে নামমাত্র। তাদের সক্ষমতার যথাযথ ব্যবহার নেই। মাছ প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানির প্রায় পুরোটাই বেসরকারি খাতে হয়।
চট্টগ্রাম মৎস্যবন্দরে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ট্রলার নির্মাণ ও মেরামত কেন্দ্র (মাল্টিচ্যানেল স্লিপওয়ে ডকইয়ার্ড) তৈরি করেছে বিএফডিসি। সেখানে বছরে ৪৮টি ট্রলার অথবা জাহাজ মেরামত (ডকিং) সুবিধা রয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, ২০১৯ সালে এটি উদ্বোধন করা হয়। গত অর্থবছর ৩২টি ট্রলার/জাহাজ মেরামত করা হয়েছে।
কমেছে বরফ উৎপাদন
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোর আটটিতে করপোরেশনের নিজস্ব বরফকল রয়েছে। এসব কলে বরফ উৎপাদন কমছে। মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বরফকলগুলোতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৫ হাজার টন বরফ উৎপাদিত হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা কমে প্রায় ১১ হাজার টনে নেমেছে।
কিছু কিছু বরফকল নষ্ট। আবার কিছু কিছু যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম নষ্ট থাকায় পূর্ণ সক্ষমতায় বরফ উৎপাদন করা যায় না বলে জানান বিএফডিসির কর্মকর্তারা। যেমন বরগুনার পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ ও পাইকারি মৎস্য বাজারে বরফকল ১০ বছর ধরে নষ্ট। সেখানে বিষখালী, ধলেশ্বর, পায়রা নদী এবং সাগরের মাছ আসে। ব্যবসায়ীদের বরফ কিনতে বেসরকারি বরফকল থেকে।
‘মাছের দাম বেশি’
বিএফডিসি রাজধানীতে ১৪ বছর ধরে মাছ বিক্রি করছে। এখন নগরের ১৫টির মতো জায়গায় করপোরেশনের ৮টি ‘ফিশ ভ্যানে’ মাছ বিক্রি হয়। কর্মকর্তারা জানান, মাছ বিক্রি করে তাঁদের লাভ হয়। অবশ্য ক্রেতাদের কারও কারও অভিযোগ, বাজারের চেয়ে তাদের মাছের দাম বেশি।
রাজধানীর ধানমন্ডির ৬/এ বিএফডিসির ফিশ ভ্যান থেকে গত ২৭ মার্চ ৩ কেজি ১৬০ গ্রাম ওজনের একটি রুই মাছ কিনে ফিরছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মনসুর রহমান খান। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৫৩০ টাকা। তিনি বলেন, ‘করপোরেশনের মাছের মান ভালো। কিন্তু দাম বেশি। তাই নিয়মিত কিনি না।’
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা অনুযায়ী, গত ২৭ মার্চ ঢাকার বাজারে রুই মাছের দাম ছিল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। করপোরেশনের মাছের দাম বেশি কেন জানতে চাইলে ধানমন্ডির ওই ফিশ ভ্যানের বিক্রয় প্রতিনিধি ফয়সাল কবির বলেন, ‘আমরা নিরাপদ ও দেশি মাছ ছাড়া বিক্রি করি না। এ জন্য দাম একটু বেশি।’
গবেষণা নেই
বিএফডিসি বলছে, তারা জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহযোগিতায় ১৯৬৬ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে চারটি বাণিজ্যিক মৎস্য আহরণ ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছিল। এরপর এমন গবেষণাও আর করতে পারেনি তারা, যেটি তাদের অন্যতম কাজ।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আশরাফ হোসেন বলেন, অব্যবস্থাপনার কারণে একসময় কর্মীদের বেতনই দিতে পারত না বিএফডিসি। এখন অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ডকইয়ার্ড করছে, ভূমিসহ অন্যান্য সম্পত্তি ভাড়া দিয়ে তারা আয় করছে। কিন্তু মৎস্য খাতের উন্নয়ন ও পৃষ্ঠপোষকতায় তারা পিছিয়ে পড়েছে।
[তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ]