কখনো কখনো যেমন মৌনতাও হয় প্রতিবাদের ভাষা, ক্রিকেটে তেমনি অনেক সময় রান না করেও জয়ের কাব্য লেখা যায়। শেষ উইকেটে মোস্তাফিজের কাজই ছিল উইকেট বাঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে মিরাজকে সংগত দিয়ে যাওয়া, যেন যখন প্রান্ত পাবেন, মিরাজ রান তোলার কাজটা করতে পারেন। ওভার হাতে ছিল যথেষ্ট। কাজেই মোস্তাফিজ ‘ডট’ বল দিয়ে গেলেও সেসবই হতে পারত জয়ের কাব্যের একেকটি জ্বলজ্বলে শব্দ।
মোস্তাফিজকে দর্শকেরা সেটি করতেই উৎসাহ দিয়ে গেলেন। মোস্তাফিজ ব্যাটিংয়ে আসা মানে রান নয়, ঠেকাও। কিন্তু মোস্তাফিজ যে একেবারেই খোলসে ঢুকে ছিলেন, তা নয়। মিরাজের সঙ্গে শেষ উইকেটে রান তাড়া করে জেতায় রেকর্ড ৫১ রানের জুটিতে ১১ বলে অপরাজিত ১০ রান করেছেন, সেখানে আবার চমকে দেওয়ার মতো দুটি বাউন্ডারি!
মোস্তাফিজের এমন নির্ভরতা অপর প্রান্তে মিরাজকেও নিশ্চিত আত্মবিশ্বাসী করেছে। আর এমন খাদের কিনার থেকে দলকে টেনে তোলাটা তো তাঁর জন্য নতুনও নয়। মোস্তাফিজের সংগত, নিজের অভিজ্ঞতা এবং গ্যালারির দর্শকদের আকাশ ফাটানো সমর্থনে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন মিরাজ।
নামের পাশে দুই ছক্কা আর চার বাউন্ডারিতে ৩৯ বলে অপরাজিত ৩৮ রান। কিন্তু সেটা কি মিরাজের কৃতিত্বটা পুরোপুরি প্রকাশ করতে পারছে? পারছে না।
বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হওয়ার পর গত দুই সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের মানুষ ‘আর্জেন্টিনা আর্জেন্টিনা’, ‘ব্রাজিল ব্রাজিল’ স্লোগান শুনে এবং দিয়ে এসেছে। কিন্তু আজ মিরাজ সুযোগ করে দিলেন তার দশগুণ উল্লাসে ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ বলে গলা ফাটানোর। মিরপুরের গ্যালারিতে সেই উল্লাসের শেষটা যখন হয় ধরে আসা গলায়, আনন্দাশ্রুতে ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টি… ঠোঁটের আগায় অবচেতনে চলে আসে… অবিশ্বাস্য! অবিশ্বাস্য! অবিশ্বাস্য মিরাজ!