ব্রাজিলের গোল–চূড়ায় উঠে নেইমার বললেন, ‘আমি পেলের চেয়ে ভালো নই’

0
104
নেইমারের উদ্‌যাপন, ছবি: এএফপি

আজকের আগে নেইমার যখন সর্বশেষ ব্রাজিলের জার্সি গায়ে তুলেছিলেন, সেটি ছিল দেশটির জন্য বেদনাদায়ক এক দিন। নেইমারের গোলে এগিয়ে গিয়েও সেদিন শেষ পর্যন্ত হেরে গিয়েছিল ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে সেই হারের পর আর মাঠে নামা হয়নি নেইমারের। যে কারণে পেলের রেকর্ডটিও ছাড়িয়ে যাওয়া হয়নি। ফুটবলের ‘রাজা’কে ছুঁতে নেইমারকে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে পাক্কা ৯ মাস।

অবশেষে আজ বলিভিয়ার বিপক্ষে আবার মাঠে নেমেছেন নেইমার। শুরুটা হয়েছিল যাচ্ছেতাই। পেনাল্টি মিস করে ম্যাচের শুরুতে পেলেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নষ্ট করেন। কিন্তু দিনটাকে শেষ পর্যন্ত নিজেরই করে নিয়েছেন এই ফরোয়ার্ড। ৬১ মিনিটে গোল করে ছাড়িয়ে যান পেলেকে। পরে অতিরিক্ত সময়ে আরও এক গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন আল হিলাল তারকা।

ব্রাজিলের ৫-১ গোলের জয়ে ২ গোলের পাশাপাশি গোলও করিয়েছেন। সব মিলিয়ে নেইমার এখন ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা। ১২৫ ম্যাচে তাঁর গোলসংখ্যা ৭৯। আজকের আগপর্যন্ত ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি পেলের দখলে (৯২ ম্যাচে ৭৭ গোল) ছিল।

ম্যাচ শেষে পেলেকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় নেইমারকে সম্মানিত করেছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। তাঁর হাতে স্মারক এবং ৭৯ লেখা জার্সি তুলে দেওয়া হয়। এরপর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নেইমার নিজের রেকর্ড নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তবে সবচেয়ে বেশি গোল করে পেলের চেয়ে ভালো খেলোয়াড় হয়ে গেছেন বলে মনে করেন না এই ফরোয়ার্ড। অন্যদিকে, যাঁর পাসে নেইমার রেকর্ডটি গড়েছেন, সেই রদ্রিগোও নেইমারের মাইলফলকের গোলে ‘অ্যাসিস্ট’ করতে পেরে নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানিয়েছেন।

পেলেকে ছাড়িয়ে নেইমারের উচ্ছ্বাস
পেলেকে ছাড়িয়ে নেইমারের উচ্ছ্বাস, ছবি: এএফপি

পেলেকে ছাড়িয়ে গিয়ে উচ্ছ্বসিত নেইমার বলেছেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত। কখনো কল্পনা করিনি, এই রেকর্ড আমার হবে। তবে আমি রেকর্ডটি নিজের করেছি। পেলেকে অতিক্রম করেছি মানে এই নয় যে আমি তাঁর চেয়ে বা জাতীয় দলের অন্য কোনো খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি ভালো। আমি সব সময় চেয়েছি ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসে এবং ব্রাজিল দলে নিজের নামটা লিখে রাখতে। আজ আমি সেটা করেছি। আমার পরিবার এবং যেসব বন্ধু এখানে আছেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

অন্যদিকে, নিজেদের আদর্শ নেইমারকে রেকর্ড গড়া গোলে সহায়তা করার উচ্ছ্বাস যেন বাঁধ মানছে না রদ্রিগোর, ‘অবিশ্বাস্য রাত! পারার (ব্রাজিলিয়ান শহর) দর্শকদের ধন্যবাদ, আপনারা অনেক ভালোবাসা দেখিয়েছেন। আপনার বিশেষ কিছুই ছিলেন। দলের জয়ের জন্য খুবই আনন্দিত। পাশাপাশি নিজের আদর্শ নেইমারকে জাতীয় দলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া গোলটিতে অ্যাসিস্ট করতে পেরেও দারুণ খুশি!’

৫-১ গোলের দারুণ জয়ের পর নেইমারকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন কোচ ফার্নান্দো দিনিজ। এমনকি তিনি জবাব দিয়েছেন নেইমারের ক্লাব আল হিলালের কোচ হোর্হে জেসুসকেও। নেইমারকে দলে রাখায় সমালোচনা করেছিলেন জেসুস, ‘আমি জানি না কেন চোটাক্রান্ত খেলোয়াড়কে ব্রাজিলের স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

নাম উল্লেখ না করে ম্যাচ শেষে তাঁকে জবাব দিয়েছেন দিনিজ, ‘এই দলের চেতনার প্রয়োজন আছে। অনেক মানুষ আছে, যারা জানে না নেইমার এখানে কী নিয়ে আসে। এখানে এসে সে কী করতে পারে। সে গোল করে এবং রেকর্ড ভাঙতে পারে। সে দারুণ এক আদর্শ। মানুষকে এটির স্বীকৃতি দিতে হবে এবং মেনে নিতে হবে। মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তাঁকে কোনো কিছু করতে হয় না। সে যে ধরনের প্রতিভা, তাতে এটা স্বাভাবিক।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.