বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার মহিষেরপাড়ার লতিফুল ইসলাম ২৪ শতক জমি বিক্রি করেন পলাশ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি বিক্রি করার জন্য গেলে ওয়ারিশ সনদের কথা বলা হয়। পাঁচ মাস আগের ওয়ারিশ সনদ দিলে দলিল আটকে দেন সাব-রেজিস্ট্রার।
বলা হয়, হালনাগাদ সনদ লাগবে। লতিফুলকে পরে খাস কামরায় ডেকে নিয়ে এর জন্য তিন হাজার টাকা দাবি করা হয়। এক পর্যায়ে মোহরারের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করেন বলে জানান লতিফুল।
উপজেলার রাধাকান্তপুরের মাহফুজার রহমান ১৫ শতক জমি কিনেছেন স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহিমের কাছ থেকে। জমির নামজারিতে নামের বানানে আকার বাদ পড়ার ভুল বের করেন সাব-রেজিস্ট্রার। এর জন্য গুনতে হয় দেড় হাজার টাকা।
মাহফুজার রহমান বলেন, নামজারি করার সময় ভুলক্রমে আব্দুর রহিমের নামের ‘আ’ এর স্থলে ‘অ’ হয়েছিল। এদিকে আব্দুর রহিম নাম দিয়েই জমির দলিল লেখা হয়। স্ট্যাম্প নষ্ট করলে বেশি টাকা খরচ হবেু এ বিবেচনায় দেড় হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন।
দলিলের ক্ষেত্রে সরকারি ফি ছাড়াও এক হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সোনাতলার সাব-রেজিস্ট্রার নুসরাত জাহানের বিরুদ্ধে। নানা ধরনের ছোট ভুল বের করে বাড়তি টাকা আদায় করা হয়।
অফিসের মোহরার জহুরুল ইসলাম দুলুর মাধ্যমে উৎকোচের টাকার পরিমাণ নির্ধারণ ও তাঁর মাধ্যমেই লেনদেন হয়। টাকার বিষয়ে দেনদরবার করা হয় সাব-রেজিস্ট্রারের খাস কামরায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারীও নানা অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, সাব-রেজিস্ট্রার বেতন পান ৩৫ হাজার টাকার মতো। তিনি প্রতিদিন প্রাইভেটকার ভাড়া করে বগুড়া শহর থেকে সোনাতলা অফিসে যান। তাঁকে মাসে গাড়ি ভাড়া গুনতে হয় ৭০ হাজার টাকা। তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করেন, সেটির চালক আল আমিন। কর্মদিবসে শহরের জলেশ্বরীতলায় ভাড়া বাসা থেকে তিনি যাতায়াত করেন। বাসা ভাড়া বাবদ তাঁর খরচ মাসে ১৮ হাজার টাকা।
সাব-রেজিস্ট্রার নুসরাত জাহান উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কিছু লোক অহেতুক সুযোগ-সুবিধা চান, না দিলেই অপপ্রচার করেন। দলিল রেজিস্ট্রি করতে হলে সব খুঁটিনাটি বিষয় দেখতে হয়। তা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
এস এম কাওসার, বগুড়া