থাইল্যান্ড আমাদের কাছে মূলত পর্যটনের দেশ হিসেবেই পরিচিত বেশি। অনেক শিক্ষার্থীও পর্যটক হিসেবেই থাইল্যান্ডে আসেন। কিন্তু পর্যটনের পাশাপাশি থাই সরকারের শিক্ষাবান্ধবনীতি থাইল্যান্ডকে ক্রমাগত এশিয়ার অন্যতম উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা খাতে তাঁরা বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দও রাখছে। বিশ্বমান ও তুলনামূলক কম খরচ হওয়ায় বর্তমানে ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচডি স্তরে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ২০ হাজার ছাত্রছাত্রী থাইল্যান্ডের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষক ও গবেষকেরা এখানকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গেই আমার দেখা হয়েছে। যেমন শুধু মাস্টার্স ও ডক্টরাল পর্যায়েই থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে বর্তমানে ১৫ জনের বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী দ্বিপক্ষীয় শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
মাহিদল ইউনিভার্সিটিতে থাইল্যান্ড সরকারের পূর্ণ শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চে পিএইচডির শেষ পর্যায়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা এককথায় দারুণ। এ দেশের নামকরা প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের পারস্পরিক সম্পৃক্ততা থাকায় প্রতিবছরই থাইল্যান্ড থেকে উল্লেখসংখ্যক শিক্ষার্থী সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বা দুই সেমিস্টার পড়ার সুযোগ পান। এই স্কিমের আওতায় আমি নিজেও জার্মানির বন ইউনিভার্সিটি ও ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটিতে পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে এক সেমিস্টার সম্পন্ন করার সুযোগ পেয়েছিলাম।
বিমানে আসা-যাওয়ার খরচ থেকে শুরু করে টিউশন ফি, আবাসন–সুবিধা, মাসিক ভাতা, ভিসা ফি, একাডেমিক খরচ— সবই বৃত্তির আওতায় আপনি পেতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে। থাকতে হবে আইইএলটিএস বা টোয়েফল সনদ। রসায়ন, জীববিজ্ঞান, আণবিক জীববিজ্ঞান, পরিবেশবিজ্ঞান, মেডিসিন, চিকিৎসাপ্রযুক্তি, ফার্মাসিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। কৃষি কিংবা জনস্বাস্থ্য বিষয়সংক্রান্ত গবেষণায় থাইল্যান্ডের শিক্ষার মান বেশ ভালো। এখানে পড়াশোনা শেষে অনেক শিক্ষার্থী ও গবেষক উচ্চশিক্ষা কিংবা কাজের জন্য অন্যান্য দেশে পাড়ি জমান।
থাইল্যান্ডে পড়ার অভিজ্ঞতা লিখেছেন মাহিদল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক নাদিম রেজা