১৯ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রার্থী, ভোটের মাঠে উত্তাপ

0
146
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে অলি–গলির সড়ক ছেয়ে গেছে পোস্টারে। সম্প্রতি নগরের সবজিপাড়া এলাকা

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টিতে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে ৫টি ওয়ার্ডে ৪ জন, ১টি ওয়ার্ডে ৩ জন ও বাকি ১৩টি ওয়ার্ডে ২ জন করে আওয়ামী লীগ নেতা ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন।

এই প্রার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেকে দল–সমর্থিত প্রার্থী বলে ঘোষণা করছেন। এসব প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। কোনো কোনো প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে অন্য প্রার্থীর সমর্থকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিএনপির ১৬ নেতা কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় তাঁদের আজীবনের জন্য বহিষ্কারে করে চিঠি দিয়েছে দল।

স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নগরের ৩, ৮, ১০, ১৮ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪ জন করে নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ–সমর্থক কামাল হোসেন, হাবিবুর রহমান ও মো. শামিম এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রার্থী হয়েছেন। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান কাউন্সিলর এস এম মাহবুবুল হক, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক জানে আলম খান, রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক শাহীদ হাসান ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি হারুন-অর-রশিদ।

রাজশাহীতে ২ প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি বোমা হামলার অভিযোগ, আলামত পায়নি পুলিশ

১০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ কর্মী মো. টনি, ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম, বোয়ালিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজ্জাক আহমেদ এবং সাবেক যুবলীগ নেতা আব্বাস আলী সরদার প্রার্থী হয়েছেন। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক জুয়েল রানা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের (দক্ষিণ) সহসভাপতি মো. ভুট্টু, থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম এবং মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি মোখলেসুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২৬ নম্বর ওয়ার্ডে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মাসুদ রানা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক আখতার আহমেদ, সমর্থক মখলেসুর রহমান ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের (পশ্চিম) সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বাবু প্রার্থী হয়েছেন। দল থেকে কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন না দিলেও আখতার আহমেদ দাবি করেছেন, তিনি দল–সমর্থিত প্রার্থী।

১২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও বর্তমান কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য শিহাব চৌধুরী এবং মহানগর তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকশেদ উল আলম।

বাকি ১৩টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের দুজন করে প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান কাউন্সিলর ও শাহ মখদুম থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল হক এবং মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ হোসেন। ইতিমধ্যে এ ওয়ার্ডে কয়েকবার আশরাফ হোসেন এবং তৌহিদুল হকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে তৌহিদুল হকের এক সমর্থকের হামলায় আশরাফ হোসেনের এক সমর্থক আহত হয়েছেন। এ সময় ছুরিকাঘাতে প্রার্থী আশরাফ হোসেন নিজেও আহত হন। এ ঘটনায় নগরের চন্দ্রিমা থানায় মামলা হয়েছে।

আশরাফ হোসেনের সমর্থকেরা ঘটনার দিন তৌহিদুল হকের কার্যালয় ও তাঁর সমর্থকের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ওই ওয়ার্ডে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ জন্য মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।

সংঘর্ষের পর জামায়াত ও আওয়ামী লীগপন্থী দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি মামলা

১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল মমিন এবং মহানগর যুবলীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ রানা প্রার্থী হয়েছেন। এ ওয়ার্ডে আবদুল মোমিনের বিরুদ্ধে মাসুদ রানার কর্মী-সমর্থককে ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। ১১ জুন মোমিনের সহযোগীরা মাসুদ রানার নারী সমর্থকদের ওপর হামলা চালান বলেও অভিযোগ করেন মাসুদ রানা।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ও মুরাদ আলী। ইতিমধ্যে আনোয়ার হোসেনের সমর্থকেরা মুরাদের নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা নিযাম উল আযীম এবং মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি গোলাম ফারুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতিমধ্যে এ ওয়ার্ডে নিযাম এবং ফারুকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এ সিটি নির্বাচনে ১৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে দলের একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.