ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে ফ্লাইটে উঠে পড়া শিশুটি বলেছিল, উড়োজাহাজ দেখেই চড়ার শখ জাগায় সে ফ্লাইটে উঠেছিল। শিশুটির সেই শখ পূরণ করেছে ওয়ালটনের শো–রুম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন প্লাজা।
প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষকতায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটায় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে উড়োজাহাজে পর্যটন শহর কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওয়ালটন প্লাজার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লিটন হাওলাদার ও শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লার সঙ্গে ১২ বছর বয়সী ওই শিশু এখন সমুদ্রসৈকতে ঘোরাফেরা করছে। কক্সবাজারের অভিজাত হোটেল ‘ওশান প্যারাডাইসে’ তাকে রাখা হয়েছে।
শিশুটি মুঠোফোনে বলে, ‘কয়েক দিন আগে বিমানে উঠেছিলাম। সেদিন আকাশে উড়তে পারিনি। আজ উড়োজাহাজে উঠে আকাশে উড়তে পেরে অনেক ভালো লাগছে। এখানে (কক্সবাজার) এসেও খুব ভালো লাগছে। সাগর দেখলাম, সাগরের পাড় দিয়ে হাঁটছি। অনেক আনন্দ পেয়েছি।’ শিশুটির চাচা ইউসুফ মোল্লা বলেন, ‘ভাতিজার কারণে আমিও প্রথম বিমানে উঠতে পারছি। ওয়ালটন প্লাজা আমাদের ঢাকা থেকে কক্সবাজারে নিয়ে আসছে। এখানে অভিজাত হোটেলে রাখছে। ভালো রেস্টুরেন্টে খাইয়েছে।’
শিশুটির বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার একটি গ্রামে। আজ সকাল ছয়টার দিকে মুকসুদপুর থেকে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। এ সময় ওয়ালটন প্লাজার ব্র্যান্ড ব্যবস্থাপক ওয়াহিদুজ্জামানসহ শিশুটির চাচা সঙ্গে ছিলেন।
ওয়ালটন প্লাজার কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, শিশুটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে উড়োজাহাজে ওঠার পর গণমাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন। কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানতে পারেন, শিশুটি উড়োজাহাজের চালক (পাইলট) হতে চায়, তখন তাঁরা তাকে উড়োজাহাজে চড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শিশুটির বাবা ওয়ালটনের গ্রাহক। ওয়ালটন প্লাজায় ‘কিস্তি সুরক্ষা পলিসি’ থেকে গ্রাহকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে পড়েছিল শিশুটি। রাত সোয়া তিনটার দিকে ওই ফ্লাইটের উড্ডয়নের কথা ছিল। শিশুটিকে ফ্লাইটের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কেবিন ক্রুরা তাকে তার আসনে বসতে বলেন। তখন শিশুটি জানায়, মা-বাবা তার সঙ্গে নেই। কার সঙ্গে উড়োজাহাজে উঠেছে জানতে চাইলেও সে বলতে পারছিল না। তার সঙ্গে পাসপোর্ট, টিকিট ও বোর্ডিং পাসও ছিল না।
পরে বিমানবন্দর থানা-পুলিশ শিশুটিকে আটক করে। ১৩ সেপ্টেম্বর শিশুটিকে পরিবারের হেফাজতে দেয় পুলিশ। এ ঘটনার পর বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ১০ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ঘটনা তদন্তে কমিটিও গঠন করা হয়েছে।