ফরিদপুর আদালতে বিএনপি নেতা আবু সাঈদ, আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ

0
133
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে ফরিদপুর আদালতে হাজির করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর আদালত চত্বরে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে ফরিদপুরে দায়ের হওয়া মামলায় রাজশাহীর বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে (৬৫) গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাঁকে একটি পুলিশ ভ্যানে করে ফরিদপুর আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদকে হাজির করার খবরে সকাল থেকেই আওয়ামী লীগের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দলে দলে আদালত চত্বরে ভিড় করেন। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে আবু সাঈদের একটি কুশপুত্তলিকা আদালত চত্বরে আনা হয়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে জেলা কারাগার থেকে বিএনপি নেতা আবু সাঈদকে পুলিশি পাহারায় আদালতে আনা হয়। তাঁকে ফরিদপুর এক নম্বর আমলি আদালতের (সদর) বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাছাড়ের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে কার্যক্রম দুই মিনিটের মধ্যে শেষ হয়।

বিএনপি নেতা আবু সাঈদকে আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুর আদালতে হাজির করা হয়
বিএনপি নেতা আবু সাঈদকে আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুর আদালতে হাজির করা হয়

রাজশাহীর এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গত ২৩ মে আবু সাঈদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর আদালতে মামলা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক। ২০ কোটি টাকার মানহানি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই মামলা হয়। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী জাহিদ ব্যাপারী বলেন, আবু সাঈদকে আজ গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৩ জুলাই।

এদিকে আবু সাঈদের হাজির করাকে কেন্দ্র করে আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার বাদী শামীম হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্‌ মো. ইশতিয়াক আরিফসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক শ নেতা-কর্মী। তাঁরা আদালত চত্বরে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ও ‘বিএনপির দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ বলে স্লোগান দেন। সাঈদকে পুলিশ কাভার্ড ভ্যান থেকে নামিয়ে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় নেওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা তাঁর ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন। পাশাপাশি জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আশরাফসহ বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা দলীয় স্লোগান দেন। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

বিএনপি নেতা আবু সাঈদকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় জুতা প্রদর্শন করেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার ফরিদপুর আদালত চত্বরে
বিএনপি নেতা আবু সাঈদকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় জুতা প্রদর্শন করেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার ফরিদপুর আদালত চত্বরে

এজলাসে আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন।

পরে এজলাসে ১০ মিনিট অবস্থানের পর আবু সাঈদকে আবার পুলিশি পাহারায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় প্রিজন ভ্যানে একটি ডিম ছুড়ে মারেন এক ব্যক্তি। পরে পুলিশ তাঁকে সরিয়ে দেয়। এ সময় আবু সাঈদের উদ্দেশে বিভিন্ন স্লোগান দেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। পরে আদালত চত্বরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ। এরপর আদালতপাড়ার স্বাধীনতা চত্বরে আবু সাঈদের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।

ফরিদপুর আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগের সংক্ষিপ্ত সমাবেশ
ফরিদপুর আদালত চত্বরে আওয়ামী লীগের সংক্ষিপ্ত সমাবেশ

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতার ‘স্লিপ অব টাং’–এর বিষয়কে কেন্দ্র করে এ ধরনের হয়রানি দুঃখজনক। আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দেওয়া উচিত। আওয়ামী লীগ আজ আদালত প্রাঙ্গণে পেশিশক্তির যে মহড়া দেখাল, তা নিন্দনীয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.