ইন্টারনেটের দাম কমাতে অনড় বিটিআরসি, সমঝোতা চায় অপারেটররা

0
80
ইন্টারনেট

ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে মোবাইল অপারেটরদের বিরুদ্ধে। প্যাকেজ সংখ্যা কমানোর পরই এ অভিযোগ ওঠে। এতেই ক্ষেপেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। ডেটার এ বর্ধিত দাম ১২ নভেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার অপারেটরদের লিখিত আকারে বিষয়টি জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। মোবাইল কোম্পানিগুলো বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। তবে বিটিআরসি অপারেটরদের সঙ্গে বসতে অনীহা প্রকাশ করেছে।

বিটিআরসির নির্দেশনা অনুসারে গত ১৫ অক্টোবর থেকে ইন্টারনেটের তিন দিন ও ১৫ দিনের প্যাকেজ বন্ধ করে দেয় মোবাইল অপারেটররা। এখন শুধু সাত দিন, ৩০ দিন এবং আনলিমিটেড প্যাকেজ চালু আছে। যদিও মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৬৯ দশমিক ২৩ শতাংশই তিন দিন মেয়াদের ডেটা প্যাকেজ ব্যবহার করতেন। প্যাকেজের সংখ্যা কমানোর পর ডেটার দাম বেড়ে যায়। অপারেটর ভেদে প্রতি জিবিতে ২০-২৫ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ায় অপারেটররা। বর্তমানে দেশে চার মোবাইল অপারেটরের ইন্টারনেট গ্রাহক ১৩ কোটি ১৯ লাখ।

এদিকে ডেটার দাম বাড়াতে ক্ষুব্ধ হয় সরকার। কারণ, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ সময়ে ইন্টারনেটের দাম বৃদ্ধি গ্রাহকদের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সরকারের ওপর মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সমালোচনায় পড়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এরপরই গত রোববার অপারেটরদের সঙ্গে বিটিআরসি কার্যালয়ে বৈঠক করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। নির্বাচনের আগে ইন্টারনেটের দাম বাড়ানোর বিষয়টিকে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে আগের অবস্থায় ইন্টারনেটের দাম ফিরিয়ে নিতে বলা হয়। একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন পর্যন্ত হলেও ডেটার দাম কামনোর চাপ রয়েছে সরকারের।

বেসরকারি মোবাইল অপারেটররা বলছে, প্যাকেজ সংখ্যা কমালে পদ্ধতিগত কারণে ডেটার দাম বাড়তে পারে এটি বিটিআরসিতে আগেই জানানো হয়েছিল। তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি। সরকারের মনোভাব জানানোর পর অপারেটররা বিষয়টির সুরাহার জন্য বিটিআরসির সঙ্গে বসার আগ্রহ প্রকাশ করে। এজন্য গত সোমবার মোবাইল অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার বিটিআরসিকে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দেন। তাতে সাড়া দেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। বিটিআরসি সাফ জানিয়ে দেয়, দাম কমানোর আগে কোনো আলোচনা হবে না।

এ ব্যাপারে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আগে ইন্টারনেটের বাড়তি দাম কমাতে হবে। না হলে অপারেটরদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ নিয়ে এখন আলোচনার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে অ্যামটবের বক্তব্য হলো, বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতির আলোকে অপারেটররা সেবার দাম নির্ধারণ করে। অফারের দর এ খাতের ওপর আরোপিত শুল্ক ও কর এবং সেবা প্রদানসংক্রান্ত ব্যয়ের ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া প্যাকেজের ‘মেয়াদ’ মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।

অ্যামটব জানায়, প্যাকেজ সংখ্যা সংকুচিত করা হলে ডেটার দাম বাড়বে– এ বিষয়টি বারবার বিটিআরসিকে জানানো হয়। প্যাকেজের দাম নির্ধারণের বিদ্যমান পদ্ধতির কারণেই তা হওয়ার কথা। এছাড়া অপারেটররা যে কোনো নতুন প্যাকেজের দাম নির্ধারণের আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন নিয়ে থাকে। এই পুরো প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। তাই মোবাইল অপারেটররা সরকারকে সহযোগিতা করছে না– এটি ঠিক নয়। তবে প্যাকেজের দাম নির্ধারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অধিকতর হস্তক্ষেপ হিতে বিপরীত হবে। সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সেবার জন্য আরোপিত সব ধরনের কর তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে অ্যামটব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.