মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর প্রায় দেড় ঘণ্টা তাঁর সঙ্গে থাকলেও ‘সিন্ডিকেট’ বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর প্রায় দেড় ঘণ্টা তাঁর সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি এ বিষয়ে কিছু বলেননি।
ওই সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে এক সম্পাদক প্রশ্ন করেন, ‘কিছু মৌসুমি সিন্ডিকেট বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে অনেক টাকা নিয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না’। এ প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, ‘এটা তো প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। তিনি কি মনে করে বলেছেন, কোন প্রেক্ষিতে বলেছেন, তা আমি কীভাবে বলব।’
তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না, প্রধানমন্ত্রী কি উদ্দেশ্যে কথাটা বলেছেন। সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট ভাঙব- এই কথা তো আমি কখনও বলি না।
টিপু মুনশি বলেন, আমি বলেছি যে, যখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ে তখন তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। কখনও কখনও আমাদের লোকবল কম হওয়ার কারণে সমস্যা হয়। সে কথাটাই বলেছি। জানি না, কাল প্রশ্ন কি হয়েছিল, কি প্রেক্ষিতে তিনি এই কথা বলেছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সংসদে বলেছি যে, কিছু কিছু ব্যবসায়ী সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের বিরুদ্ধে জেল-জুলুম ব্যবস্থা নিলে মানুষের সাফারিংস (ভোগান্তি) আরও বাড়বে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। ডিমের দাম বাড়ার সময় বলেছিলাম যে, প্রয়োজনে সাপ্লাই বাড়াতে আমদানির ব্যবস্থা করব।
শ্রীলঙ্কা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফল হলেও বাংলাদেশ না পারার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা আর আমাদের দেশের অবস্থা এক না। শ্রীলঙ্কার আয়ের মূল উৎস তাদের পর্যটন। সেটা চাঙ্গা করেছে। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা ছোট দেশ। আমাদের তো বিশাল দেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে হবে।’
তিনি বলেন, লন্ডনেও তিনটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না। জার্মানিতে দোকানে তেল নেই। গ্লোবাল রেসিসনের (বৈশ্বিক মন্দা) মধ্যেও আমাদের চেষ্টা চলছে।
বাজারে কি তাহলে সিন্ডিকেট নেই? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে টিপু মুনশি বলেন, সিন্ডিকেটের একটা বিশাল অর্থ। ডিম তো গ্রামে লাখ লাখ মানুষও উৎপাদন করছে। এত মানুষ মিলে সিন্ডিকেট করে, সে কথা বলব কীভাবে? তবে সুযোগ যে তারা নেয় না, তা বলব না।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে এফডিআই করতে আগ্রহী জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তবে তারা কর কাঠামোসহ কিছু বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আমরা তাদের ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করতে বলেছি। সেখানে বিনিয়োগ করলে ১৫ বছরের কর অবকাশ সুবিধা রয়েছে।
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন কিনা, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে তারা কোনো কথা বলেনি।