বগুড়ায় বাসচাপায় ভ্যানচালক নিহতের ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে ডাকা আন্দোলন স্থগিত করেছে জেলা পরিবহন মলিক-শ্রমিক যৌথ পরিষদ। পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাসে বুধবার আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বগুড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চারমাথায় মালিক-শ্রমিক যৌথ পরিষদের সমাবেশে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু এ ঘোষণা দেন। সমাবেশে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ। আমরাও চাই মহাসড়ক নিরাপদ থাকুক। সোমবার দুপচাঁচিয়ায় বাসের ধাক্কায় এক ভ্যান চালকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি অবশ্যই দুঃখজনক। ওই ঘটনায় দুপচাঁচিয়ার ওসি আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। পুলিশ চালকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, ঠিক আছে। কিন্তু বাস মালিক, হেলপারকে কেন আসামি করলো। তারা কি দোষ করেছেন?
তিনি বলেন, মামলা ও দুপচাঁচিয়ার ওসির প্রত্যাহার না হলে বৃহস্পতিবার থেকে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হতো। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সঙ্গে আজ বৈঠক হয়েছে। তারা দুপচাঁচিয়ার ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ১০ জুলাই মামলার শুনানিতে জেলহাজতে থাকা মালিক, চালক ও হেলপারের জামিনে পুলিশ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। এছাড়া অন্য দাবিগুলো সমাধানের আশ্বাস দেওয়ায় আপাতত আন্দোলন স্থগিত করা হচ্ছে।
বগুড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ বলেন, পরিবহন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মহাসড়ক থ্রি হুইলার, ভটভটিমুক্ত রাখার ইচ্ছা সবার। এখানে নতুন করে কিছু বলার নেই। পুলিশ পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে খতিয়ে দেখবে। সেখানে ওসি বা অন্য কারও দোষ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক যৌথ পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া বাস-মিনিবাস পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম পাঁচ দফা দাবিতে সমাবেশ ও পরবর্তীতে দাবি মানা না হলে ধর্মঘটের ডাক দেন।
সংগঠনটির পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদের প্রত্যাহার, দুর্ঘটনায় ভ্যান চালক নিহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার, বাস ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ আদায়, মহাসড়কে অবৈধ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ ও মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ।
সোমবার বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় মোফাজ্জল হোসেন মোফা নামে এক ভ্যানচালক নিহত হোন। এ ঘটনায় ভ্যানচালকের স্ত্রী মঞ্জিলা হক বাদী হয়ে দুপচাঁচিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে বাস মালিক সারওয়ার হোসেন, চালক সিরাজুল ইসলাম ও তার সহকারী আশিককে আসামি করা হয়। এই মামলাকে কেন্দ্র করে পরিবহন নেতারা এবারের আন্দোলনের ডাক দেন।
বুধবারের এই সমাবেশে মালিক- যৌথ পরিষদের সভাপতি আকতারুজ্জামান, বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হামিদসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।