সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই বিএনপিপন্থীরা ব্যালট ছিনতাই করেছেন বলে মন্তব্য করেছে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, গতকাল (মঙ্গলবার) সুপ্রিম কোর্টে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে, বিচার বিভাগের ইতিহাসে, সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে কালিমা লেপন করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৩’ উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মনে আছে, এর আগে বিএনপির আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে প্রধান বিচারপতির দরজা লাথি মেরেছিল। গতকাল তারা ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই করেছে। তারা আসলে প্রতিষ্ঠানকেই ধ্বংস করতে চায়। কোনো প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলুক সেটি তারা চায় না।
তিনি বলেন, বিএনপি জানে যে, তারা ঢাকা বার নির্বাচনে হেরেছে, সেখানে হারার পর তারা বুঝতে পেরেছে যে, সুপ্রিম কোর্টে তাদের হার নিশ্চিত। সে কারণে তারা প্রথমে ভোট বর্জনের নাটক, পরে আবার ব্যালট পেপার ছিনতাই করল। সুতরাং এভাবে তারা সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে চায়। তারা আগামী নির্বাচনকেও বাধাগ্রস্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে নির্বাচন কারও জন্য থেমে থাকবে না।
‘২০১৪ সালের যেমন কারও জন্য থেমে থাকেনি, ২০১৮ সালের নির্বাচনেও কারও জন্য থেমে থাকেনি, আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে যে নির্বাচন অথবা এ বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনও কারও জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে না।’
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমান নির্বাচন চায় না, বেগম খালেদা জিয়াও নির্বাচন চায় না। কারণ উনারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। উনারা যেহেতু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না, এজন্য উনারা নির্বাচন চায় না। তবে আপনাদের অনেক নেতা নির্বাচন চায়। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও আমি বলতে পারি বিএনপির নেতারা নির্বাচন করবে। সুতরাং নির্বাচন সবাইকে নিয়েই হবে ইনশাআল্লাহ।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি মহিলা আওয়ামী লীগকে বলবো- আমাদের নির্বাচন সন্নিকটে, দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী, সুতরাং নারীদের কাছে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে যাওয়ার ইতিহাস ও বন্দনা পৌঁছে দিতে হবে, নারীদের সংগঠিত করতে হবে। আজ জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশটাকে যেভাবে বদলে দিয়েছেন, নারীদের সামাজিক মর্যাদা যেভাবে উন্নীত করেছেন, এই বদলে যাওয়ার কাহিনিটা তাদের শোনাতে হবে। আমরা যদি সঠিকভাবে শোনাতে পারি, নারীরা অবশ্যই অন্য কোথাও ভোট দেবেন না। আমি আপনাদের অনুরোধ জানাবো সেই মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে ও সংসদ সদস্য শবনম জাহান শিলার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম।
অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রথম নারী চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম এনডিসি, বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য ফারজানা ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রথম নির্বাচিত নারী সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয় কারাতে খেলোয়াড় মারজানা আক্তার প্রিয়া, প্রথম নারী মেট্রোরেল অপারেটর মরিয়ম আফিজা ও প্রথম নারী ট্রেন অপারেটর আসমা আক্তারকে সম্মাননা ভূষিত করেন অতিথিরা।