এবার ডিএজি এমরানের নেমপ্লেট খুলে ফেলা হলো

0
103
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া, ছবি: সংগৃহীত

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নেমপ্লেট খুলে ফেলা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পঞ্চম তলায় অবস্থিত একটি কক্ষে বসতেন এমরান। কক্ষের সামনে তাঁর নাম উল্লেখ করে নেমপ্লেট সাঁটানো ছিল। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই নেমপ্লেট খুলে ফেলা হয়।

এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নাম উল্লেখিত নেমপ্লেটটি দুপুর ১২টার দিকে খুলে ফেলেছেন বলে দাবি করেছেন আরেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম ফজলুল হক। সাড়ে চারটার দিকে তিনি বলেন, ‘ডেপুটি অ্যাটর্নি হিসেবে রাষ্ট্র এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি রাষ্ট্রের স্বার্থ দেখবেন। অথচ রাষ্ট্রের একজন আইন কর্মকর্তা হয়ে রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাই তাঁর নেমপ্লেটটি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে থাকতে পারেন না বলে মনে করি। যে কারণে তাঁর নেমপ্লেট খুলে ফেলেছি।’

অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পঞ্চম তলায় অবস্থিত ৫১১ নম্বর কক্ষে বসেন এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। যোগাযোগ করা হলে পাঁচটার দিকে তিনি বলেন, আজ তিনি অফিসে যাননি, বাসাতেই আছেন। নেমপ্লেট খুলে ফেলা হয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জেনেছেন।

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছেন বিশ্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। এই বিষয়ে গতকাল সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’

খোলা চিঠির (বিবৃতি) বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে—এমন দাবি করে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’

এ দিকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বিবৃতি-সংক্রান্ত বক্তব্য দিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। পরে আইনমন্ত্রী বলেন, তাঁর (এমরান আহম্মদ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনাকে (এমরান) সই করতে আমি কখনো বলিনি। আমি কোনো দিন কোনো আইন কর্মকর্তা বা কাউকে সই করতে বলি না। আমাদের অফিস থেকে আমার জানামতে, নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, কোনো বিবৃতি তৈরি করা হয়নি।’

এমরান বলেছেন, হোয়াটসঅ্যাপে এমন একটি নির্দেশনা (বিবৃতিতে সই) এসেছে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘…উনি (এমরান) কি আমার সঙ্গে কথা বলবেন না? আমার কোনো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে? আমি নিজে করি কোনো হোয়াটসঅ্যাপ? কে কী বলল, উনি এটি বলে দিলেন। আমি তো বললাম, উনার কোনো উদ্দেশ্য আছে। উদ্দেশ্যটা জানেন, পরিষ্কার করেন, আপনারা নিজেরা খোঁজ নেন। নিশ্চিত উনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এটি করেছেন।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.