দেড় মাসে ১০ হাজার নেতা-কর্মীর নামে মামলা, ৮৩৬ জন গ্রেপ্তার: বিএনপি

0
99
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় দলটির নেতারা, ছবি: সংগৃহীত

দেড় মাসে প্রায় ১০ হাজার নেতা-কর্মীর নামে মামলা, ৮৩৬ জন গ্রেপ্তার এবং কারাগারে নির্যাতনে এক নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, আসন্ন সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে বিরোধী নেতা-কর্মীদের মাঠ থেকে সরানোর উদ্দেশ্যে মামলা, গ্রেপ্তার ও হত্যার ঘটনা ঘটছে।

গত সোমবার অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভা থেকে এসব অভিযোগ করা হয়। তবে সভায় ওঠা এসব অভিযোগের বিষয় বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমে জানায় দলটি।

বিএনপি বলছে, গত ১৯ মে থেকে সারা দেশে ২১৫টি মামলায় বিএনপির ৯ হাজার ৮০০ নেতা-কর্মী আসামি হয়েছেন। এর মধ্যে ৮৩৬ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ২০ জুন কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্যাতন ও কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বিএনপির নেতা দিদার মোড়লের মৃত্যু হয়েছে।

সভায় ঈদুল আজহার আগে ও পরে, এমনকি ঈদের দিনেও বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের হামলা এবং দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় ক্ষমতাসীনদের সন্ত্রাস, পুলিশের নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে নেতা-কর্মীদের মুক্তি, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে স্থায়ী কমিটি।

‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ মিথ্যা নয়’

সিরিয়ায় গুম বা নিখোঁজ ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের চূড়ান্ত পরিণতি সম্পর্কে জানতে সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ একটি নিরপেক্ষ ‘বডি’ গঠনের প্রস্তাবে যে ভোটাভুটি হয়েছে, এতে বাংলাদেশের ভোটদানে বিরত থাকার সমালোচনা করেছে বিএনপি।

দলটির স্থায়ী কমিটি বলেছে, বাংলাদেশের ভোটদানে বিরত থাকা মানবাধিকার নীতির পরিপন্থী। বাংলাদেশ জাতিসংঘে মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নির্বাচিত হলেও এ বিষয়ে ভোটদানে বিরত থাকা প্রমাণ করে, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে গুরুতর অভিযোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উঠেছে, সে অভিযোগ মিথ্যা নয়। সভায় এই অবৈধ সরকারের সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্রবিরোধী তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন গণবিরোধী

ব্যাংকের পরিচালকদের মেয়াদ ৯ বছর থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করে সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী আনা হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ, পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য এভাবে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন সম্পূর্ণ গণবিরোধী ও সুশাসনবিরোধী।

বিএনপি বলছে, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক–ব্যবস্থায় নৈরাজ্য চালিয়ে ব্যাংক খাতকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। বিশেষ করে খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে সরকার দুর্নীতির লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণখেলাপির জন্য কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই তাদের সব ধরনের সুবিধা দিয়েই চলেছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে যে আইনটি করা হয়েছে, অবিলম্বে তা বাতিল করতে হবে।

কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কমায় উদ্বেগ জানিয়ে দলটি বলছে, চামড়ার দাম পরিকল্পিতভাবে কমিয়ে সাধারণ মানুষ বিশেষত এতিমখানাগুলোকে তাদের প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির ১০ সদস্য সভায় উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.