দর-কষাকষি করে ঘুষ লেনদেন, দুই রাজস্ব কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার

0
118
রাজস্ব কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও ইমরান কবীর

কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ মাদারীপুর সার্কেল অফিসের দুই রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকেই স্ট্যান্ড রিলিজ করেছে খুলনার ভ্যাট কমিশন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন। তবে তাঁদের বদলি শাস্তি হিসেবে নয়, বরং পুরস্কার হিসেবে আরও সম্ভাবনাময় স্থানে হয়েছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল।

জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন জানান, গত ২৯ ডিসেম্বর বিকেলে ১০ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফাঁস হয়। সেখানে দেখা যায়, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ মাদারীপুর সার্কেল অফিসের রাজস্ব কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও ইমরান কবীর অফিস কক্ষে বসে ঘুষের টাকা গ্রহণ করছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। পরে ২ জানুয়ারি বিকেলে খুলনার ভ্যাট কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার ম. সফিউজ্জামান অভিযুক্তদের স্ট্যান্ড রিলিজ করেন। মঙ্গলবার দুপুরে এ বিষয়ে মাদারীপুর সার্কেল অফিসকে চিঠি দেওয়া হলে তাঁরা খুলনায় চলে যান।

জানা গেছে, অভিযুক্ত দু’জনকেই খুলনা অফিসে সংযুক্ত করে অফিসিয়াল তদন্ত করবে ভ্যাট কমিশন।

ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম লিখন বলেন, ৫০০ টাকার কয়েকটি নোট দেওয়ার পরে তা গুনে পকেটে ভরেন রফিকুল ইসলাম। আর পাশে বসে ছিলেন ইমরান কবীর। দুই রাজস্ব কর্মকর্তা ঘুষের টাকার জন্য দরকষাকষি করেন। এমনকি চাহিদামতো প্রতি মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আরও ২ হাজার টাকা মাসোহারা চান। এটা খুবই দুঃখজনক। পরে তিনি (লিখন) ও তাঁর বন্ধু অমিত হোসেন গণমাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দেন। এতে বিভিন্ন মহল থেকে তাঁদের ওপর চাপ এসেছে।

লিখন আরও বলেন, শুনেছি তাঁদের বদলি হয়েছে। এতে তো দোষীর কোনো বিচার হলো না। বরং মাদারীপুর জেলার চেয়ে বড় জেলা খুলনায় বদলি হলো। সেখানে রেখে তাঁদের তদন্ত হলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই তাঁদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত করলে তাঁদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। স্ট্যান্ড রিলিজ কোনো সমাধান হতে পারে না। দোষীরা বিচারের মুখোমুখি হোক, এটাই চান তিনি।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সভাপতি ইয়াকুব খান শিশির বলেন, তাঁদের বদলি হওয়াতে কোনো শাস্তি হলো না। বরং তাঁরা আরও ভালো স্থানে গেছেন। তাঁদের অপকর্ম আরও বাড়বে। এখানে থাকতে তদন্ত হলে ভালো হতো। খুলনার কেউ হয়তো বিষয়টি জানবেও না। কিছুদিন পরে সবাই ভুলে যাবে। সংশ্নিষ্টদের প্রতি বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানান তিনি।

কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ মাদারীপুর সার্কেল অফিসের বিভাগীয় কর্মকর্তা ও ডেপুটি কমিশনার এনামুল হককে মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যবহূত মোবাইল ফোনে একাধিকার কল করলেও রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা দিলেও সাড়া মেলেনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.