জ্বালানিসংকটে ধুঁকছে ৩৩% বিদ্যুৎকেন্দ্র

0
93
সারা দেশে চলছে লোডশেডিং। এ কারণে বিপাকে পড়েছেন নগরবাসী। বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটরের ওপর ভরসা করছেন অনেকেই। জেনারেটর চালানোর জন্য পাম্প থেকে ডিজেল কিনছেন এক ব্যক্তি। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায়

জ্বালানি আমদানির ডলার পাওয়া যাচ্ছে না নিয়মিত। এ সংকটের জন্য অব্যবস্থাপনা ও আমদানিনির্ভর পরিকল্পনাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে মোট বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রায় ৩৩ শতাংশই গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেলের অভাবে ভুগছে। এসব কেন্দ্রের ৯ হাজার মেগাওয়াটের সক্ষমতা থেকে দিনে গড়ে উৎপাদিত হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট। এতে লোডশেডিং বাড়ছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

গত দেড় দশকে দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র ২৭টি থেকে বেড়ে ১৫৩টি হয়েছে। বিচ্ছিন্ন চর, দুর্গম পাহাড়েও বিদ্যুৎ–সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সরকার শতভাগ বিদ্যুতায়নের অর্জন উদ্‌যাপন করেছে। আর এখন শহর-গ্রাম সবখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে ভুগছে মানুষ। চাহিদার চেয়ে বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও জ্বালানিসংকটের কারণে তা কাজে লাগছে না।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের এমন সংকটের জন্য অব্যবস্থাপনা ও আমদানিনির্ভর পরিকল্পনাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পিজিসিবির হিসাবে দেখা গেছে, দেশে মোট ১৫৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি বড় অংশ কারিগরি কারণে বন্ধ থাকে। ৩ জুন কারিগরি কারণে ৪৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ছিল। একই দিন জ্বালানিস্বল্পতার কারণে সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহৃত হয়নি ৫৬টি কেন্দ্রের। এরপর ৪ জুন কারিগরি কারণে বন্ধ ছিল ৫০টি কেন্দ্র। আর জ্বালানি সমস্যায় ছিল ৫২টি কেন্দ্র। ৫ জুনও কারিগরি কারণে বন্ধ ছিল ৫০টি কেন্দ্র। আর জ্বালানির অভাবে ঠিকমতো উৎপাদন করতে পারেনি ৫১টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। সব মিলিয়ে জ্বালানিসংকটে ভুগছে এমন কেন্দ্রগুলো ৯ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতা থেকে গড়ে উৎপাদন করছে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট। এর বাইরে বাকি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে দিনে গড়ে উৎপাদিত হচ্ছে ৮ হাজার মেগাওয়াট।

চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন করতে না পারায় এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বাড়ছে। ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার লোডশেডিং দিতে হচ্ছে মধ্যরাতের পর। গতকাল মঙ্গলবার দিনের বেলাতেও সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয়েছে তিন হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি। এতে ঢাকা শহরে তিন থেকে চার ঘণ্টা আর গ্রামে কোথাও কোথাও ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করা হচ্ছে।

দেশজুড়ে চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। তাঁরা বলেছেন, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের সফলতা ছিল। কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি বদলে গেছে। লোডশেডিং যেভাবে বাড়ছে, তাতে জনরোষের সৃষ্টি হতে পারে। আগেভাগে কয়লা-গ্যাস আমদানি করলে এ অবস্থা হতো না।

বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে এ সংকটকে আকস্মিক দাবি করে সবাইকে ‘একটু ধৈর্য’ ধরার অনুরোধ করেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেছেন, আগামী ১৫-১৬ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

ডলারের অভাবে কয়লাসংকট

দেশের পাঁচটি কয়লাখনি থাকলেও মাত্র একটি থেকে উৎপাদন করা হচ্ছে। নিজস্ব কয়লায় বড়পুকুরিয়ায় একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো হয়। এটিও কয়লার অভাবে পুরো সক্ষমতা ব্যবহার করতে পারছে না। কয়লা তোলার পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক থাকায় বাকি চারটি খনি থেকে উৎপাদন না করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তাই বাকি চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্র আমদানি করা কয়লার ওপর ভিত্তি করে নির্মাণ করা হয়। যদিও এখন দেশীয় খনি থেকে কয়লা তোলার চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে একটি কয়লার অভাবে পুরোপুরি বন্ধ। বাকি চারটির মধ্যে তিনটিতে কয়লার সংকট আছে। একটি কেন্দ্রের সক্ষমতার পুরোটা ব্যবহৃত হচ্ছে।

আমদানি করা কয়লা থেকে তিন বছর আগে উৎপাদনে আসে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র। ডলারের অভাবে বকেয়া বিলের কারণে কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকায় কেন্দ্রটি গত সোমবার পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ৩০ কোটি ডলার বকেয়া থেকে ১০ কোটি ডলার পরিশোধ করে কয়লা আনার প্রক্রিয়া আবার শুরু হয়েছে।

ডলারের অভাবে কয়লা কিনতে না পেরে দুই দফা বন্ধ হয়েছিল বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। বর্তমানে এটি চালু থাকলেও পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে না। ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি ইউনিট থেকে গড়ে ৩০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করছে।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরাম উল্লাহ গতকাল বলেন, কয়লার মজুত কম থাকায় সক্ষমতার চেয়ে কম উৎপাদন করা হচ্ছে। আজ বুধবার নতুন একটি কয়লাবাহী জাহাজ আসার কথা রয়েছে। এ ছাড়া আমদানি বাড়াতে ঋণপত্র খোলার প্রক্রিয়া চলছে।

গ্যাসের ঘাটতি অনেক দিনের

মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৪৭ শতাংশ গ্যাসভিত্তিক। গ্যাসভিত্তিক ৬৪টি কেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ১১ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি থাকায় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা পালাক্রমে বন্ধ রাখতে হচ্ছে। বাকি ৮ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার মধ্যে গড়ে উৎপাদিত হচ্ছে ৬ হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি। দিনে এখন ৩৮০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে সব মিলিয়ে ৩০০ কোটি ঘনফুট।

পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, ডলার না থাকায় বহুজাতিক কোম্পানি শেভরনের বিল নিয়মিত দিতে পারছে না পেট্রোবাংলা। এলএনজি আমদানিও ব্যাহত হচ্ছে। এলএনজি আমদানির শুল্ক-কর বাবদ ১২ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে গ্যাস অনুসন্ধানে জোর না দিয়ে আমদানির দিকে ঝোঁকায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত ২০ বছরে বড় কোনো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়নি। ছোট ছোট কিছু গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে বাপেক্স। রাষ্ট্রীয় এ গ্যাস অনুসন্ধান সংস্থাটি শক্তিশালী করা হয়নি। সমুদ্রসীমা বিজয়ের এক যুগ পরও গ্যাস অনুসন্ধানে সুখবর নেই।

টাকা পাচ্ছে না তেলচালিত কেন্দ্র

ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন ৮টি। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় গত বছর ডিজেলচালিত কেন্দ্রগুলো না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এখন তিনটি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। বাকি পাঁচটি বন্ধ রাখা হচ্ছে। এর বাইরে ফার্নেস তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে ৬৫টি। মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৬ হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি। এর মধ্যে ২৫ থেকে ২৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালানির অভাবে নিয়মিত উৎপাদন করতে পারছে না। তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সব মিলিয়ে গড়ে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র বলছে, বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে বিক্রি করে পিডিবি। এ ঘাটতি পূরণে সরকার ভর্তুকি দেয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ভর্তুকির টাকা নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২৭ হাজার কোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল পাবে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্র পাবে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ইমরান করিম বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম। তাই ফার্নেস তেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা এখন সাশ্রয়ী। কিন্তু বিল না পাওয়ায় ব্যাংকের দায় শোধ করা যাচ্ছে না এবং নতুন করে জ্বালানি তেল আমদানির ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে না।

আমদানিনির্ভরতাই ভোগাচ্ছে

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি আমদানির ওপর ভিত্তি করে বিদ্যুৎ খাতে ২০১০ ও ২০১৬ সালে মহাপরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিশ্ববাজারে বর্তমান দাম বিবেচনা করলেও বছরে জ্বালানি আমদানিতে লাগবে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। দাম বেড়ে গেলে ডলারের চাহিদা আরও বাড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক হিসাব বলছে, জ্বালানি আমদানিতে খরচ বেড়েছে অনেক। শুধু পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য আমদানিতে গত অর্থবছরের (২০২১-২২) জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৩৬৭ কোটি ডলার। আর চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) একই সময়ে এটি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। খরচ হয়েছে ৫৩৬ কোটি ডলার। জ্বালানি খাতে বাড়তি আমদানি খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সব ধরনের জ্বালানি আমদানি, বিভিন্ন বিল পরিশোধে প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ১২৫ কোটি ডলারের দরকার হয়। বছরে দরকার দেড় হাজার কোটি ডলার। আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে গিয়ে নিয়মিত জটিলতায় পড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন সংস্থা। জ্বালানি সরবরাহকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিল বকেয়াও বাড়ছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ বিভিন্ন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। দেশের প্রতিটি ঘর বিদ্যুৎ-সুবিধার আওতায় এনেছে। ২০০৮ সালে মাত্র ৪৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পেত, যা এখন শতভাগ। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ও যুদ্ধ পরিস্থিতি পার করে বিশ্ব জ্বালানি বাজারের দাম এখন নিম্নমুখী। গত বছরের এপ্রিল-জুন সময়ের গড় দামের তুলনায় এ বছর মে মাসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে প্রায় ৩৩ শতাংশ। এলএনজির দাম প্রতি মেট্রিক মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) ৬০ ডলারের ওপরে উঠেছিল। এখন তা ১৫ ডলারের নিচে। প্রতি টন কয়লার দাম ৩০০ ডলার থেকে কমে এখন ১৫০ ডলারের নিচে। অথচ জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে থাকছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও প্রতিটি কেন্দ্রকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া (ক্যাপাসিটি চার্জ) পরিশোধ করতে হয়। শুধু কেন্দ্র ভাড়ায় গত অর্থবছরে (২০২১-২২) ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে পিডিবির।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম বলেন, আমদানিনির্ভরতাই ভোগাচ্ছে। আমদানিনির্ভর হলে সাধারণত দুই ধরনের সংকট দেখা দেয়। বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়া বা পণ্যের সরবরাহ ঘাটতি। এখন বিশ্ববাজারে দাম কম এবং পণ্যের সরবরাহ আছে। অথচ কেনার জন্য ডলার নেই সরকারের হাতে। এটা একটা ভিন্ন পরিস্থিতি। আর শুধু জ্বালানি নয়, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এখন সব খাতেই।

মহিউদ্দিন

ঢাকা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.