জীবন আঘাত দেবে তবু থামা যাবে না: ওরিয়ান্থি প্যানাগারিস

0
118

মাত্র তিন বছর বয়সে পিয়ানোয় হাতেখড়ি আমার। মূলত বাবার আগ্রহেই গিটার হাতে নিয়েছিলাম। ১১ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে কার্লোস সান্টানার এক শোতে যাই। এরপর হাতে নিই ইলেকট্রিক গিটার। ১৪ বছর বয়সে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের বিভিন্ন ব্যান্ডের সঙ্গে বাজানোর অভিজ্ঞতা হয়ে যায় আমার। গিটার নিয়ে প্রথমবারের মতো মঞ্চে উঠি স্টিভ ভাই নামে বিশ্ববিখ্যাত গিটারিস্টের অনুষ্ঠানে। এরপর ১৮ বছর বয়সে কার্লোস সান্টানার সঙ্গে গিটার বাজাই। এসব বলার যথেষ্ট কারণ আছে। আরও বলি, শুনুন, আমার জীবনের মোড় ঘোরানোর মতো আরও কিছু সাফল্যের মধ্যে আছে ৫১তম বার্ষিক গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসে বাজানো। সেখানে আমি ক্যারি আন্ডারউডের লিড গিটারিস্ট হিসেবে ছিলাম। পরবর্তী সময়ে ক্যারি আন্ডারউডে আমাকে নিয়মিত বাজানোর আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিশ্ববিখ্যাত পপসম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গেও বাজানোরও কথা হয়েছিল। গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের ওই অনুষ্ঠানের দিনেও মাইকেলের দল আমার বাজানো দেখে এবং চুক্তি সই করে। অথচ দেখুন, ‘দিস ইজ ইট’ নামে মাইকেল জ্যাকসনের সেই কনসার্টের আগেই জ্যাকসন পৃথিবীকে গুডবাই জানান। এটা কি জীবন থেকে থমকে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট ঘটনা নয়? কিন্তু আমি থেমে যাইনি। এরপরও বিশ্বের নামিদামি সংগীতশিল্পীর সঙ্গে কাজ শুরু করি।

গান লেখা ও শেখায় মন

এরপর গান লেখায় মন দিই। লেখালেখির জন্য ন্যাশভিলে গিয়েছিলাম দুই সপ্তাহের জন্য। সেখানে অনেক কিছু শিখেছি। ন্যাশভিল আমার খুব পছন্দের। সেখানকার মিউজিশিয়ানরাও অনেক ভালো। আমার অ্যালবামের জন্য একটু কান্ট্রি ফ্লেবার চেয়েছিলাম। তাদের রেকর্ডিংয়ের একটি নিজস্ব ধারা আছে, যেটা সত্যিই অর্গানিক। সাধারণত ট্যুর এবং শো নিয়ে ব্যস্ত থাকার পরও যেটুকু সময় পাই তা আমি গিটার বাজাতে ব্যয় করি। শুধু তাই নয়, যখনই কোনো আইডিয়া আসে, তখনই গিটার হাতে তুলে নিই। তাছাড়াও দিনে আধঘণ্টা জ্যাম করা হয়। এই সময়টা বাড়ানো খুবই দরকার। পিয়ানো বাজাতেও পছন্দ করি। পিয়ানো শিখেছিলাম তিন-চার বছর বয়সে। এর পর আর শেখা হয়নি। গান লেখার সময় মাঝে মধ্যে পিয়ানো বাজাই। অতটা ভালো না হলেও আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।

স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো!

মাইকেল জ্যাকসনের একজন ফ্যান হিসেবে তাঁর সঙ্গে কাজ করাটা ছিল আমার কাছে স্বপ্নের মতো। যখন মাইকেলের অডিশনের জন্য কল পাই, তখন আমার অ্যালবামের কাজ করছিলাম। তিনি আমাকে ইউটিউবে দেখে অডিশনের জন্য ডাকেন। সেখানে যাই, বাজাই এবং তিনি তার শোয়ের জন্য নিয়ে নেন। তবে মাইকেলের অসময়ে চলে যাওয়াটা অন্যদের মতো আমিও কল্পনা করিনি। তার সঙ্গে কাটানো অল্প সময়টাই আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মাইকেল ছিল সুপার সুইট। সে যাক, নিজের জীবনের কাছ থেকে আমি শিখেছি, শত প্রতিকূলতার মাঝেও হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। যত অসুবিধাই আসুক, অনেক বেশি প্র্যাকটিস করতে হবে। যখন ছোট ছিলাম, প্র্যাকটিসের সময় আঙুল কেটে যেত। তখন রেস্ট নিতাম, পরে আবার শুরু করতাম। জীবন আসলে এমনই। বার বার আঘাত আসবে, শরীর মন ও স্বপ্ন রক্তাক্ত হবে তবু আবার উঠে দাঁড়াতে হবে। নতুন করে এগিয়ে যেতে হবে। তা না হলে আসবে না সাফল্য; মনে রাখবে না কেউই!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.