জাহাঙ্গীরের দুর্নীতির বিষয়টি জনগণ জানে, তারাই এর জবাব দেবে

গাজীপুর দেশের বৃহত্তম সিটি করপোরেশন। এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৫ মে। তফসিল অনুযায়ী গতকাল রোববার ছিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শেষ দিন। সেখানে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লা খানের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সিটি নির্বাচনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছে তাঁর সঙ্গে।

0
127
আজমত উল্লা খান

নগরের উন্নয়নে আপনার পরিকল্পনা কী?

আজমত উল্লা খান: গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে আমি একটি পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। শিল্পপ্রধান গাজীপুরে বসতি দিন দিন বাড়ছে। এ জন্য এই সিটি করপোরেশনকে চারটি জোনে (অঞ্চলে) ভাগ করতে চাই। সেগুলো হচ্ছে—আবাসিক, শিল্প, বাণিজ্যিক ও বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে স্বাস্থ্যসেবা–সংক্রান্ত অঞ্চল। পরিকল্পনার কারণ হচ্ছে, আমরা আগামী প্রজন্মকে এই অসুস্থ পরিবেশে রেখে যেতে পারি না। আমি আমার পরিকল্পনাকে তিন স্তরে ভাগ করেছি। যারা এই লাইনে অভিজ্ঞ, তাদের নিয়ে পরিকল্পনা করে কাজটি করব, যদি আমি জয়ী হই। আমি গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশন হিসেবে গড়ে তুলব। আমার নামে এক টাকার দুর্নীতিও নাই। এত দিন গাজীপুর সিটি করপোরেশনে যে বাজেট ও বরাদ্দ হয়েছে, তার সঠিক ব্যবহার হয়নি। যদি সঠিক ব্যবহার হতো, তাহলে আরও উন্নত হয়ে যেত। আজ এখানে কবরস্থান নেই, খেলার মাঠ নেই। এককথায় কিছুই নেই।

 নির্বাচনী ইশতেহারে কী চমক থাকছে?

আজমত উল্লা খান: ৯ মে প্রতীক বরাদ্দ হবে। তারপরই আমি আমার ইশতেহার তুলে ধরব। আমার নির্বাচনী ইশতেহারের প্রধান কথা হলো, সমৃদ্ধ ও সুষম গাজীপুর। আমরা এটাকে সমৃদ্ধ করতে চাই, আমরা এটাকে সুষম বণ্টনের আওতায় আনতে চাই।

গাজীপুরে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আচরণবিধি মানলেন না আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত

 জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ষড়যন্ত্র করে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। আপনি কী মনে করেন?

আজমত উল্লা খান: এ বিষয়ে আমার মন্তব্য নেই। তবে নির্বাচনের যে আচরণবিধি, আইন এবং ২০০৯ সালের সিটি করপোরেশন আইনের ভিত্তিতেই তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক উনাকে ঋণখেলাপি বলেছে। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে। এটা আমি বা আমাদের বিষয় নয়। এটা আইনের বিষয়। তিনি আপিল করতে চেয়েছেন। তাঁর আপিল করার সুযোগ আছে।

জাহাঙ্গীর আলমকে নিয়ে কোনো চাপ ‘অনুভব করছেন না’ আজমত উল্লা

 জাহাঙ্গীর আলম আপিলে টিকে গেলে আপনার কী করণীয়?

আজমত উল্লা খান: আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী বলে কোনো প্রার্থী নেই। সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাই তাঁকে নিয়ে আমাদের কোনো কিছু করণীয় নেই।

আজমত উল্লার সামনে বড় যে চ্যালেঞ্জ

 নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমের মাকে নিয়ে আসার কারণ কী মনে করেন?

আজমত উল্লা খান: জাহাঙ্গীর আলম হয়তো আগেই জানতেন তিনি নির্বাচন করার অযোগ্য হবেন। মাকে দিয়ে মনোনয়নপত্র কেনানোর অর্থ হতে পারে তিনি বর্তমান অবস্থা আগেই জানতেন। তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না, এটাও জানতেন। সে কারণেই হয়তো তিনি তাঁর মাকে প্রার্থী করেছেন।

যদি কোনো ধরনের আলোচনা হয়, তবে সেটার জন্য দরজা খোলা: জাহাঙ্গীর আলম

 জাহাঙ্গীর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। সেখানে তাঁর বড় দুর্বলতা কী ছিল?

আজমত উল্লা খান: বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাঁর (জাহাঙ্গীর আলম) অসংখ্য দুর্নীতির খতিয়ান বের হয়েছে। চাক্ষুষ অনেক কিছু আছে। সে বিষয়ে আমি বলতে চাই না। জনগণই বিষয়টি জানে এবং জনগণই তার জবাব দেবে।

 আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ইসির চিঠির বিষয়ে আপনার কী বলার আছে?

আজমত উল্লা খান: এটার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, নির্বাচন কমিশন এখানে গ্রহণযোগ্য ও অর্থবহ একটি নির্বাচন করতে চায়। কমিশনের এই চিঠির মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে। আমি চিঠি পেয়েছি। তবে চিঠিতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে মনে হয়েছে, আমি কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। তারা যেহেতু আমাকে ডেকেছে, আমি তাদের বিষয়টির জবাব দেব। আমি বিশ্বাস করি, আমি তাদের বুঝাতে সক্ষম হবে যে আমি কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.