জঙ্গি আস্তানায় স্ত্রী-মেয়েসহ আটক শরিফুল বাড়ি ছাড়েন ২৫ জুলাই

0
103
জঙ্গি সন্দেহে আটক সাদা শার্ট পরা শরিফুল

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি থেকে আটক ১০ জনের মধ্যে তিনজনই সাতক্ষীরার বাসিন্দা। তারা হলেন- শরিফুল ইসলাম (৪৮), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪৪) ও মেয়ে হাবিবা খাতুন (২০)।

শরিফুলের বাড়ি সাতক্ষীরার তালা উপজেলায়। পেশায় তিনি একজন সাইকেল মিস্ত্রি। অভাবের সংসার তাদের। আগে থেকেই জাকের পার্টি করতেন তিনি। প্রতি বছরই জাকের মঞ্জিলে ওরশ শরীফে অংশ নিতেন শরিফুল। তবে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি এলাকার কেউ জানতো না।

জানা যায়, শরিফুল তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে গত ২৫ জুলাই বাড়ি থেকে একসঙ্গে বের হয়ে যান। স্বজনদের তারা জানান, সিরাজগঞ্জে যাচ্ছে আগেই জঙ্গি সন্দেহে আটক মেয়ের জামাই শান্তকে আদালতের মাধ্যমে জামিন করাতে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর শরিফুল, তার স্ত্রী ও মেয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। শনিবার খবর আসে জঙ্গি আস্তানা থেকে শরিফুল, তার স্ত্রী ও মেয়েকে পুলিশ আটক করেছে।

জঙ্গি সন্দেহে আটক শরিফুল ইসলামের বাড়ি। 

রোববার দুপুরে তালার খলিলনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ নলতা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে ছোট্ট একটি দোকান রয়েছে শরিফুলের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দোকানটিতে সাইকেল মিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। সারাদিন কাজ করে যা আয় হতো তাই দিয়েই কোনো রকম চলতো তার অভাবের সংসার। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরটি তালাবন্ধ।

পরিবারের অন্য সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ২৫ জুলাই স্ত্রী আমেনা বেগম, মেয়ে হাবিবাকে নিয়ে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান শরিফুল ইসলাম।

শরিফুলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম জানান, আমরা গরিব মানুষ। শরিফুল সাইকেল মিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালায়। কখনো খারাপ কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত হয়েছে এমন কোনো খবর এলাকার মানুষ দিতে পারবে না। খোঁজখবর নিয়ে দেখুন।

কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কিনা এমন প্রশ্নে নজরুল বলেন, জাকের পার্টি করে শরিফুল। প্রতি বছর ওরশ শরীফেও যায়। মাঝে মধ্যে আমি যাই সেখানে। এটা কোন রাজনৈতিক দল না। জঙ্গি সদস্য হয়েছে এটা আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না। শুনে অবাক হয়েছি। পরিবারের অন্য সদস্যরাও হতভম্ব হয়ে পড়েছেন জঙ্গি সন্দেহে আটকের খবর শুনে।

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, দুই বছর আগে জঙ্গি সন্দেহে সিরাজগঞ্জ থেকে আটক হন শরিফুলের মেয়ের জামাই শান্ত। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। তাকে আদালত থেকে জামিনে মুক্ত করতে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বের হয়েছিলেন শরিফুল।

শরিফুলের প্রতিবেশী আফজাল হোসেন বলেন, ছেলেটি বেশ ভদ্র। ব্যবহারও ভালো। আমরা কখনো কল্পনা করতে পারিনি শরিফুলের মতো ছেলে জঙ্গি হবে। এলাকার মানুষ হতবাক হয়েছে তার আটকের খবর জানার পর।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শুনেছি শরিফুল তার স্ত্রী, মেয়েসহ আটক হয়েছে। আমরা পরিবারটির বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.