‘চুমু-কাণ্ডে’ স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সভাপতি রুবিয়ালেসকে ৯০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা। যে সিদ্ধান্তে অখুশি রুবিয়ালেসের মা আনহেলেস বেহার ছেলের সমর্থনে নেমেছিলেন অনশনে। অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন রুবিয়ালেসের মা। জরুরি ভিত্তিতে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে গির্জায় বসে অনশন করছিলেন আনহেলস বেহার, সেই গির্জার যাজক আন্তোনিও রদ্রিগেজ সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মত্রিলের দিভাইনা পাস্তোরা গির্জায় নিজেকে আটকে রেখে অনশনের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেন বেহার। তখন গির্জার বাইরে রুবিয়ালেসের পরিবারের এক সদস্য সংবাদকর্মীদের জানিয়েছিলেন, নারী বিশ্বকাপ ফাইনালে বিজয়মঞ্চে আসলে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে হেনি হেরমোসো ‘সত্যি’ না বলা পর্যন্ত আনহেলেস বেহার এই প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন।
তবে তিন দিন পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। আন্তোনিও রদ্রিগেজ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আপনাদের বলতে হচ্ছে, তাঁর ব্রেনের কার্যক্ষমতা কমেছে। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাপ ও অন্য অনেক কিছুর কারণে তিনি ভালো বোধ করছিলেন না। তাঁর পা দুটো ফুলে উঠেছিল, অনেক ক্লান্তও ছিলেন তিনি। তিনি এখানে আর নেই।’ বেহার মত্রিল হাসপাতালে রোগী হিসেবে ভর্তি হয়েছেন কি না, সেটা নিশ্চিত করেনি হাসপাতালটি। সংবাদ সংস্থা এএফপি মত্রিল হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।
মূলত রুবিয়ালস ঘটনা ঘটিয়েছিলেন ২০ আগস্ট, অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে। সেদিন ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফিফা নারী বিশ্বকাপ শিরোপা জেতে স্পেন। এরপর পুরস্কারমঞ্চে স্পেনের মিডফিল্ডার হেরমোসো পদক নেওয়ার সময় দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান রুবিয়ালেসের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে তিনি তাঁর ঠোঁটে চুমু দেন।
এরপর তা নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। পরে ক্ষমাও চেয়েছিলেন রুবিয়ালেস। কিন্তু কাজ হয়নি। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী থেকে ফিফার দরবার পর্যন্ত গড়ায় ব্যাপারটি। আর ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রুবিয়ালেস বলেছিলেন, চুমুর বিষয়টি ছিল পারস্পরিক, স্বতঃস্ফূর্ত ও উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ, যা অস্বীকার করেন হেরমোসো।
সংবাদ সংস্থা এএফপিকে রুবিয়ালেসের কাজিন ভ্যানেসা রুইজ বেহার বলেছিলেন, ‘যে ভোগান্তিটা হয়েছে, সেটি অন্যায্য। তার (রুবিয়ালেস) মা ধর্মপরায়ণ, তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন। তিনি অনশন শুরু করেছেন, গির্জা ছাড়তে চাইছেন না। আসলে যা ঘটেছে, তা ন্যায্য বলে মনে হচ্ছে না। তাকে আগেভাগেই দোষী বানানো হয়েছে। এটা মোটেও স্বাভাবিক লাগছে না…আমরা চাই হেনি সত্যিটা বলুক। কারণ, সে তিনবার নিজের বক্তব্য পাল্টেছে। তার (রুবিয়ালেস) পরিবার খুব ভোগান্তির মধ্যে আছে।’
এখন এ ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয়, সেটিই দেখার বিষয়।