কারাগারে হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগ, নাম এল পাপিয়ার

0
111
নির্যাতন

গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে এক হাজতিকে নির্যাতন করে টাকাপয়সা লুট করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাজতির ভাই আবদুল করিম গত রোববার গাজীপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর ওরফে পাপিয়ার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী হাজতি গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার বাসিন্দা। তিনি ঢাকার কোতোয়ালি থানার একটি মামলার আসামি। ১৬ জুন থেকে ওই নারী গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রয়েছেন।

ওই বন্দীর ভাই আবদুল করিম লিখিত অভিযোগে বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তাঁর বোনের সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে গিয়েছিলেন। নাম–ঠিকানা নেওয়ার তিন ঘণ্টা পর সাক্ষাতের টিকিট কাউন্টার থেকে তাঁকে জানানো হয়, ‘ডিও’ নেই। দেখা করা যাবে না।

জামিনে বের হয়ে আসা লোকদের কাছে আমার বোন সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, আমার বোনকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে।

আবদুল করিম, হাজতির ভাই

আবদুল করিম বলেন, ‘তারপরও আমি সেখানে অপেক্ষা করতে থাকি। পরে জামিনে বের হয়ে আসা লোকদের কাছে আমার বোন সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, আমার বোনকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। তখন আমি উদ্বিগ্ন হয়ে ফিরে যাই এবং পরদিন আবার কারাগারে আমার বোনের সঙ্গে দেখা করতে যাই। পরে জানতে পারি, আমার বোনের কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সেই টাকা কেড়ে নেওয়ার জন্য কারাগারে দায়িত্বে থাকা হাবিলদার ফাতেমা বেগম, নাসিমা আক্তার; হাজতি, কয়েদিসহ যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়া, সোনালী, আনন্দিকা, অবন্তিকা ও নাজমা আমার বোনকে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই এমন স্থানে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে।’

অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, গত শুক্রবার বোনের সঙ্গে আবার দেখা করার জন্য কারাগারের সাক্ষাৎ কাউন্টারে টিকিট কাটতে যান আবদুল করিম। কিন্তু টিকিটম্যান তাঁকে অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ আলেয়ার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। আলেয়ার কাছে গেলে আবদুল করিমকে অনেকক্ষণ বসিয়ে রেখে তিনি ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবাকে নিয়ে আসেন।

আবদুল করিম বলেন, ‘জান্নাতুল তায়েবার কাছে আমার বোনকে মারধর করে আহত করার কথা জানালে তিনি বলেন, “আপনার বোনের কিছু হয়নি।” আমার বোনের সঙ্গে দেখা করার কথা বললে জান্নাতুল তায়েবা বলেন, “দেখা করা যাবে না।” তখন জান্নাতুল তায়েবার সঙ্গে আমাদের কথা–কাটাকাটি হয়। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই জান্নাতুল তায়েবা আমার বোনের সঙ্গে আমাদের দেখা করতে দেননি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি।

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ওই হাজতি ৭ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে কারাগারে আসেন। বিষয়টি পরদিন তদন্ত করে পাওয়া যায়। টাকার বিষয়ে মেট্রন (কারাগারের সুবেদার) জানতে চাইলে ওই কয়েদি তাঁর ওপর আক্রমণ করেন। পরে সেখানে উপস্থিত কয়েদিরা ওই কয়েদিকে চড়থাপ্পড় মেরেছেন। এ ঘটনায় কেউ আহত হননি। ঢাকা থেকে ও তাঁর পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.