গাজীপুরে ঘরমুখো যাত্রীদের ঢল, তীব্র যানজট
গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণার পরপরই ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। হঠাৎ সড়কে যাত্রী বেড়ে যাওয়ায় যাতায়াত ভাড়াও বেড়ে গেছে কয়েক গুণ—এমন অভিযোগ করছেন যাত্রীরা।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকরা ঈদযাত্রায় শামিল হওয়ায় চন্দ্রা পয়েন্টে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রার কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় গাড়ির দীর্ঘ সারি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ঘরমুখো কয়েকজন পোশাক শ্রমিকের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, কবিরপুর থেকে চন্দ্রা পার হয়ে ঈদযাত্রার গাড়িগুলো মহাসড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। এতে মহাসড়কে চলাচলকারী দূরপাল্লার যানবাহনগুলো গতি হারাচ্ছে। গতি হারিয়ে এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
দেখা যায়- গাজীপুর ছাড়াও গাবতলী, আশুলিয়া, বাইপাল, সাভার ও নবীনগর এলাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো চন্দ্রা এলাকা পার হয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।
যাত্রী ও পরিবহন মালিকরা জানান, গাজীপুরে ছোটবড় প্রায় ৫ হাজার শিল্পকারখানা রয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে গতকাল সোমবার থেকেই অনেক কারখানা ছুটি হয়ে গেছে। আজ দুপুর ১২টার পর অধিকাংশ কারখানা শ্রমিকরা ছুটি পেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। ফলে বেড়েছে যাত্রীদের ভিড়, দেখা দিয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট। তবে বিকেল নাগাদ এই চাপ আরও কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে যাত্রীদের অভিযোগ, ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। চন্দ্রা ত্রিমোড় পর্যন্ত পৌঁছাতে অটোরিকশায় যেখানে ৩০ টাকা ভাড়া ছিল এখন সেই ভাড়া ১০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া রংপুর, বগুড়া, কুড়িগ্রামসহ উত্তরবঙ্গের গাড়ি স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। যেখানে ৫০০ টাকা ভাড়া ছিল সেখানে ১০০০-১২০০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
তবে পরিবহন মালিকরা বলছেন, ঢাকাগামী গাড়িতে যাত্রী না থাকায় খরচ ওঠাতে তারা বেশি ভাড়া আদায় করছেন।
ঈদের বাকি আর একদিন। শেষ মুহূর্তে পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় একযোগে ছুটছেন শ্রমজীবী এই মানুষরা। অপেক্ষাকৃত কম ভাড়ায় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়েও গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে নাওজোড় হাইওয়ে থানার ওসি শাহাদাত হোসেন বলেন, শেষ মুহূর্তে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। এর পাশাপাশি গাড়ির চাপ বাড়ায় গাড়ির গতি কিছুটা কম। তবে বিকেলের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
যানজট নিরসনে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।