দেশে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলায় আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষি খাতে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করলে ১ হাজার ১৬০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব বলে বেসরকারি এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর হোটেল শেরাটনে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে বলা হয়, দেশের নীতিনির্ধারকদের দাবি, সরকার টেকসই কৃষি খাত গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়ে কাজ করতে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সমন্বয় প্রয়োজন।
‘জলবায়ু অভিযোজন: কৃষিভিত্তিক শিল্প উন্নয়নে বাংলাদেশের সুযোগ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (এসসিবি) বাংলাদেশের করপোরেট, ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান বিটোপি দাস চৌধুরী। এসসিবি বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি) ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ডব্লিউএফও) যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে।
বিটোপি দাস চৌধুরী বলেন, কৃষি খাতে চলমান জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে গেলে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষি খাতে ১২০ কোটি ডলার খরচ করতে হবে। তাতে এই সময়ে কৃষি খাতে ১ হাজার ১৬০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘টেকসই কৃষির জন্য পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সে জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কৃষিকে আরও লাভজনক খাত হিসেবে দেখতে চাই। সে জন্য বাণিজ্যিক কৃষিতে ভালো করতে হবে। কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’
প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বিনিয়োগ করে কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সেটা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়, বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণও গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান। বক্তব্য দেন আইসিসিবির সহসভাপতি এ কে আজাদ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাসের এজাজ বিজয়, বাংলাদেশে এফএওর ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি নুর খন্দকার ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. খরশেদ আলম, এসিআই অ্যগ্রোলিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফ এইচ আনসারি, বেঙ্গল মিটের সিইও এ এফ এম আসিফ, কৃষি অর্থনীতিবিদ টি এস আমজাদ ও এফএওর জ্যেষ্ঠ কৃষিবিদ মো. আবদুল কাদের।