দিনাজপুরে হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

0
72

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় তজিমউদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মামলার ২৬ বছর পর তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২–এর বিচারক শ্যাম সুন্দর রায় এ রায় দেন।

একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক রাজ্জাকুল ইসলাম।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন চিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ সুকদেবপুর গ্রামের আফজাল হোসেন, উত্তর ভোলানাথপুর গ্রামের আবদুল লতিফ ও একই গ্রামের শামশুল ওরফে শামসুল হক। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ ঘটনায় অপর আসামি আবদুল কাফিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের শিকার তজিমউদ্দিন চিরিরবন্দর উপজেলার উত্তর ভোলানাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলার কারেন্টেহাট এলাকায় একটি হাস্কিং মিলের নৈশ্যপ্রহরী ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ সময় ধরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের সঙ্গে হত্যার শিকার হওয়া তমিজউদ্দিনের জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও মামলা চলছিল। ঘটনার রাতে ১৯৯৭ সালের ৩১ জুলাই হাস্কিং মিলে দায়িত্ব পালন করছিলেন তমিজউদ্দিন। সকালে বাড়ি না ফেরায় স্ত্রী আরজিনা বেগম তাঁকে খোঁজাখুজি শুরু করেন। ঘটনার তিন দিন পর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের দামুয়া পুকুরে কচুরিপানার ভেতর থেকে তমিজউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় পরের দিন তমিজউদ্দিনের স্ত্রী বাদী হয়ে চিরিরবন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলায় গ্রেপ্তার ৫ জন আসামির মধ্যে আফজাল পুলিশের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পেনাল কোডের কয়েকটি ধারায় আদালতের কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ১৯৯৯ সালের ৩০ আগস্ট অভিযোগ গঠন করেন এবং মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য অত্র আদালতে পাঠান। মামলার আরেক আসামি মোকলেছার রহমান ২০০৭ সালে মৃত্যুবরণ করায় তাঁকে বিচারকার্য হতে বাদ দেওয়া হয়েছে। আসামি আফজাল, লতিফ ও শামসুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না পাওয়ায় কাফিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলাটি পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন হাসনে ইমাম ও মোস্তাফিজুর রহমান এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আবদুস সামাদ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.