ঈদের ছুটিতে রফিক মোল্লার বাড়িতে অতিথি এসেছে। তাঁদের জন্য পদ্মার ইলিশ কিনতে গতকাল শনিবার তিনি যান মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া মৎস্য আড়তে। কিন্তু হতাশ হতে হয়েছে জেলার শ্রীনগরের রাঢ়িখালের বাসিন্দা রফিক মোল্লাকে। তিনি বলেন, ‘পদ্মার ইলিশ কিনতে এসেছিলাম। এখন দেখি দাম খুব চড়া।’ দুই সপ্তাহের মধ্যে ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
জেলেদের ভাষ্য, চলতি মৌসুমে দেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকাসহ পদ্মা-মেঘনায় আশানুরূপ ইলিশ মিলছে না। যে কারণে দামও বাড়তির দিকে। মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগের বছর এই সময়ে ইলিশের সরবরাহ ছিল অনেক বেশি। ফলে দামও ছিল কম। ইলিশ কম ধরা পড়ার কারণ হিসেবে কম বৃষ্টিপাত ও নদীতে পানির স্বল্পতাকে দায়ী করছেন মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিন সপ্তাহ আগেও নদীতে প্রচুর ইলিশ পাওয়া গেছে। তখন এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একই আকারের ইলিশ এখন ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকৃতির ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ আগে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজারে।
মাছ ব্যবসায়ী কার্তিক দাস বলেন, মাওয়া আড়তে আসা ২৫ ভাগ ইলিশ পদ্মা নদীর ও ২৫ ভাগ দক্ষিণাঞ্চলের। বাকি ইলিশ আসে চট্টগ্রাম থেকে। পদ্মার ইলিশের চাহিদা বেশি থাকায় দামও তুলনামূলক বেশি। আড়তদার মোয়াজ্জেম হোসেনের ভাষ্য, এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে।
লৌহজং উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর নদীতে পানির পরিমাণ খুবই কম। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পানির গুণগত মানেও কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এর প্রভাবেই ইলিশের উৎপাদন কম হয়েছে।