একনেকে অনুমোদন পেল ৫২ হাজার ৬৫৩ কোটির ৩৭ প্রকল্প

0
114
এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি-পিআইডি

চাঁদপুরের মতলবে ঝুলন্ত সেতু, পাবনার ইছামতী নদী পুনরুজ্জীবিতকরণসহ ৩৭টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক। এসব প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পও রয়েছে। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এ রকম কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। তবে তারা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে এসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, বৈঠকে ৪৪টি নতুন প্রকল্প কার্যতালিকায় থাকলেও অনুমোদন পেয়েছে ৩৭টি। বাকি সাতটি প্রকল্প ফেরত দেওয়া হয়। এ প্রকল্পগুলো পরবর্তী একনেক সভায় উপস্থাপনের কথা রয়েছে। সরকারের বর্তমান মেয়াদে আরও একটি একনেক বৈঠক হওয়ার কথা। এ ছাড়া এর আগে পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদন দেওয়া ৩২টি প্রকল্প একনেকের অবগতির জন্য উপস্থাপন করা হয়।

বৈঠক-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য টোল আদায়ের মাধ্যমে আয় বাড়াতে আলাদা তহবিল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত শেষের তাগিদ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি যেসব প্রকল্পের বিদেশি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেগুলোর ঋণ দ্রুত ছাড় করতেও তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।

রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এর কারণে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তাঁর বিশ্বাস, আবারও আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে। কারণ, দেশের জনগণের প্রতি তাদের আস্থা আছে। মন্ত্রীর ভাষায়, আমরা সন্ত্রাসী নই। ধ্বংস নয় বরং নির্মাণে বিশ্বাসী। আমরা আবার ক্ষমতায় আসব।

নির্বাচনের আগে যাচাই-বাছাই না করে শুধু টিকমার্ক দিয়ে প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হয় কিনা– এমন প্রশ্নে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার বলেন, আমরা সবকিছু যাচাই-বাছাই করেই অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করি। নির্বাচনের বিষয়টি হলে অন্য প্রকল্পগুলো আসত না। উদাহরণ হিসেবে তিনি যমুনা নদী টেকসই ব্যবস্থাপনা ও গ্যাস ট্রান্সমিশন প্রকল্পের কথা বলেন। এসব প্রকল্পের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।

অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর তথ্য যাচাইয়ে দেখা যায়, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রাধান্য পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পদ্মার ভাঙন থেকে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলাধীন তালবাড়িয়া এবং কুমারখালী উপজেলাধীন শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি এলাকা রক্ষা প্রকল্প। সরকারের অর্থায়নে এ প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এ ছাড়া রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের রংপুর বিভাগ কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নের ৭৮ কোটির প্রকল্প, স্থানীয় সরকার বিভাগের ১ হাজার ১০০ কোটির নওগাঁ জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ৪৯০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাগুরা জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে জয়পুরহাটের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৪৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ জেলায় বিএসটিআইর আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.