কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ) সশস্ত্র দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় ইমাম হোসেন (১৫) নামের এক রোহিঙ্গা কিশোর নিহত হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে আশ্রয়শিবিরের এ-১৪ ব্লকের পানির ট্যাংকি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আশ্রয়শিবিরের কয়েকজন রোহিঙ্গা। নিহত ইমাম হোসেন বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১০) এফ-১৪ ব্লকের বাসিন্দা সিরাজ হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় একই ক্যাম্পের এফ-১৭ ব্লকের বাসিন্দা আজিজুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ নুর (৪৭) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা জানান, আজ সকাল ৮টার দিকে ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ আশ্রয়শিবিরের এ-১৪ ব্লকে ১০ থেকে ১৫ জনের আরসার একটি দল অবস্থান নিয়ে কয়েকজন রোহিঙ্গা মাঝিকে (নেতা) খোঁজাখুজি শুরু করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান আরএসওর ১৫ থেকে ১৭ জন সন্ত্রাসী। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেখান থেকে দৌড়ে পালাতে গিয়ে ইমাম হোসেন ও মোহাম্মদ নুর গুলিবিদ্ধ হন। দুজনকে উদ্ধার করে পাশের ক্যাম্প-৯ এর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ইমাম হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। মোহাম্মদ নুর সেখানে চিকিৎসাধীন।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় ইমাম হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। ইমামের মাথায় গুলি লাগে। আর মোহাম্মদ নুরের পা ও পিঠে গুলি লাগে। আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা বলে জানা গেছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার রাত ১০টায় উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-২ পশ্চিম) ডি-৯ ব্লকের আরসা সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন নূর হোসেন ওরফে ভুট্টু (৪২) নামের এক রোহিঙ্গা মাঝি (নেতা)। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের ডি-৯ ব্লকের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাব-মাঝি ছিলেন। ওই ব্লকের বাসিন্দা আবদুল শুক্কুরের ছেলে।
পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় মাসে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ১১ জন আরসা সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।