ঈদের আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তি দাবি

0
139
‘ডিএসএ ভিকটিমস নেটওয়ার্ক’ আজ বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) গ্রেপ্তার হওয়া সব ব্যক্তির মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ‘ডিএসএ ভিকটিমস নেটওয়ার্ক’। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের সংগঠনটির পক্ষ থেকে আইনটি বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার ভুক্তভোগী কয়েকজন সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন।

সম্মেলনে ইশরাত জাহান নামের একজন বলেন, তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ২ বছর ৭ মাস কারাবাস করেছেন। ২০২০ সালের নভেম্বরে তাঁকে র‌্যাব বাসা থেকে আটক করে। তাঁর অভিযোগ, এরপর রিমান্ডে ও কারাগারে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বর্তমানে কারাগারে আটক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তাঁর বোন সিরাজুম মুনিরা। কান্নার জন্য ঠিকমতো কথাই বলতে পারছিলেন না তিনি।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের তরুণ এন ইউ আহমেদ দাবি করেন, তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সহযোগিতা চাইতে গিয়ে উল্টো নিজেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁকে ১১ মাস কারাগারে থাকতে হয়েছে।

নিজেদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ভুক্তভোগী হিসেবে উল্লেখ করে আরও কয়েকজন তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

মামলায় ভুক্তভোগীদের শীর্ষে রাজনীতিবিদ, দ্বিতীয় সাংবাদিক

সংবাদ সম্মেলনে সরকারি তথ্য উপস্থাপন করে বলা হয়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৭ হাজার ১টি মামলা করা হয়েছে। ‘ডিএসএ ভিকটিমস নেটওয়ার্ক’ সর্বশেষ ১ হাজার ৩৩১টি মামলার তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করে দেখেছে, এসব মামলায় ৪ হাজার ১৬৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ মামলা হয়েছে রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে, ৪৩১টি। এরপরই আছেন সাংবাদিকেরা। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৩৬৮টি। আর শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১৩৪টি।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তারসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ভুক্তভোগীর কিছু উদাহরণ তুলে ধরা হয়।

লিখিত বক্তব্যে ‘ডিএসএ ভিকটিমস নেটওয়ার্ক’–এর সদস্যসচিব প্রীতম দাশ বলেন, দেশের নাগরিকদের ডিজিটাল মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলে ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হয়। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে দেখা গেছে, এই আইনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে মারাত্মকভাবে খর্ব করা হচ্ছে। রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ নারী-পুরুষদের এ আইনের কারণে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় ৮ মাস কারাগারে জগন্নাথের শিক্ষার্থী খাদিজা

ঈদের আগেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরা, মো. ইসমাইল, তরিকুল ইসলামসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান প্রীতম দাশ। একইসঙ্গে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব নিপীড়নমূলক আইন বাতিলের দাবি জানান। সব ক্ষতিগ্রস্তকে ক্ষতিপূরণ ও মিথ্যা মামলাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।

দাবি মানা না হলে অবিলম্বে সারা দেশে এই আইনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.