নানা রঙের ব্যানার আর চোখ ধাঁধানো ল্যাম্পপোস্ট। রাস্তার দু’পাশে সবুজের সমারোহ। প্রায় আধা কিলোমিটার দূর থেকেই সহজে অনুধাবন করা যায়, সামনেই বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স। যেখানে অবস্থিত দেশের কোনো ক্লাবের প্রথম ভেন্যু কিংস অ্যারেনা। স্টেডিয়ামের চারপাশে নির্মাণের প্রতিচ্ছবি, তবে ভেতরে ঢুকলেই ছড়াবে মুগ্ধতা। ইউরোপের আদলে নতুন সাজে সজ্জিত বসুন্ধরার এই মাঠ। সবকিছুতেই আধুনিকতার ছোঁয়া। ড্রেসিংরুম থেকে শুরু করে মিডিয়া ট্রিবিউন; সবকিছুই করা হয়েছে ইউরোপের আদলে। অবকাঠামোর সঙ্গে স্টেডিয়ামের সবুজ গালিচার দিকে চোখ পড়লে যে কারও মন ভরে যাবে। মাঠে বসানো হয়েছে দূর্বাঘাস। আছে অত্যাধুনিক পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। গ্যালারিতে বসানো হয়েছে লাল আর সাদা রঙের চেয়ার। ৬ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি গতকাল ঢুকেছে ইতিহাসের পাতায়। রোববার বাংলাদেশ-আফগানিস্তান প্রীতি ম্যাচের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো কিংস অ্যারেনায় হয়েছে আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
ঐতিহাসিক মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখতে কোনো কিছুর আয়োজন করেনি বসুন্ধরা কিংস। কারণ তাদের সব আয়োজন এএফসি ক্লাব কাপকে ঘিরে। ২ অক্টোবর এএফসি কাপে ওড়িশার বিপক্ষে মাঠে নামবে দেশের ফুটবলে দাপট দেখানো বসুন্ধরা কিংস। অবশ্য সাড়ম্বর কোনো কিছু করার মতো সময় ছিল না। গত মাসে ফিফা-এএফসির অনুমোদন পাওয়ার পর দ্রুত চেয়ার বসানোর কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ। চীন থেকে উন্নতমানের চেয়ার আনলেও সেগুলো বসাতে সময় সাপেক্ষ হওয়ায় আপাতত বসানো হয়েছে দেশীয় চেয়ার। এরপর ধাপে ধাপে চায়না থেকে আমদানি করা চেয়ারগুলো বসানো হবে। গ্যালারির পূর্ব এবং উত্তর পাশটি দোতলা করা হবে। গ্যালারিগুলো করা হয়েছে মাঠের কাছাকাছি, যাতে করে ফুটবলারদের খুব সহজেই চিন্তে পারেন দর্শকরা। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে ফ্লাডলাইট। প্রায় ৩০ হাজার লাক্সেও ফ্লাডলাইটের আলো জ্বলে ওঠার পর পুরো স্টেডিয়ামের রংটাই যেন বদলে যায়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতের আঁধার নামতে আরও রঙিন কিংস অ্যারেনা।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ দিয়ে যাত্রা শুরু হয় কিংস অ্যারেনার। দেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথম কোনো ক্লাবের ভেন্যুতে জাতীয় দলের ম্যাচ ঘিরে সমর্থকদের মধ্যে উন্মাদনা ছিল। দর্শকদের মাঠে আনতে বসুন্ধরার গেট থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছিল শাটল বাসের। সেই বাসে করে দলে দলে দর্শকরা মাঠে এসে ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ স্লোগানে মুখরিত করে রাখে পুরো স্টেডিয়াম। আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে জামাল ভূঁইয়ারাও নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। কিন্তু শেখ মোরসালিন ও রাকিব হোসেনদের গোল মিসে কিংস অ্যারেনার আন্তর্জাতিক অভিষেকে বাংলাদেশ জিততে পারেনি।