ঢাকার আশুলিয়ায় শিমু আক্তার (২১) নামের এক নারীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় স্বামী ফারুক হোসেনকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। হত্যাকাণ্ডের পর চার বছরের ছেলেকে নিয়ে তিনি পালিয়ে রংপুরের পীরগঞ্জে গিয়েছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শুক্রবার সকালে সাভারের নবীনগরে র্যাব-৪–এর সিপিসি-২–এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তার ফারুক হোসেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মোগন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিহত শিমু আক্তারের বাড়িও একই এলাকায়। তাঁরা দুজনেই আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
এর আগে গত সোমবার রাতে আশুলিয়ার গাজীরচট নয়াপাড়া এলাকায় প্রকৌশলী মামুনের বাড়ির পঞ্চম তলার একটি কক্ষে হত্যার ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত নারীর বড় বোন লাবণী আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪–এর সিপিসি-২–এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খান বলেন, গ্রামের বাড়িতে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিমু আক্তার ও ফারুক হোসেন দম্পতির মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ১০ থেকে ১৫ দিন আগেও তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধান করা হয়। এরপর তাঁরা সাভারে এসে উভয়েই কাঠগড়া এলাকার আগামী অ্যাপারেলস লিমিটেড পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। সোমবার রাতে পুনরায় বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। এ সময় ফারুক সবজি কাটার ছুরি দিয়ে শিমুর গালায় আঘাত করেন। এতে গলা প্রায় দ্বিখণ্ডিত হয়ে মারা যান শিমু। পরে মরদেহ শৌচাগারে ওড়না দিয়ে ঢেকে একমাত্র শিশুসন্তানকে (৪) নিয়ে ভোরে বাসা থেকে পালিয়ে যান ফারুক।
র্যাব জানায়, এ ঘটনায় ফারুককে গ্রেপ্তারে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র্যাব-৪ ও র্যাব-১৩–এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। একপর্যায়ে তারা গতকাল রংপুরের পীরগাছা থেকে ফারুককে গ্রেপ্তার করে এবং শিশুটিকে উদ্ধার করে।
র্যাব কর্মকর্তা রাকিব মাহমুদ খান বলেন, গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন—এমন সন্দেহ করতেন তিনি। তাঁদের মধ্যে প্রায়ই বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া হতো। সোমবার রাতে এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে গলা কেটে স্ত্রীকে হত্যা করেন তিনি। গ্রেপ্তার ফারুককে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশুটিকে তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।