আমদানি হচ্ছে চার কোটি ডিম, যেসব শর্তে অনুমতি দেওয়া হলো

0
120
ডিম আমদানি

দাম নিয়ন্ত্রণে এবার ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর জন্য শুরুতে চার কোটি ডিম আদমানি করতে চারটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ‘যত দ্রুত সম্ভব’ ডিম দেশে আনতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি এক কোটি করে ডিম আমদানি করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দেশের বাজারে ডিমের দাম কমিয়ে আনা। সেজন্য আমদানির অনুমতি দেওয়া শুরু হয়েছে। ডিমের দাম না কমা পর্যন্ত আমরা এটা চালিয়ে যাবো।’

দেশে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ার পর কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ডিম আমদানি করতে অনুমতি চেয়েছিল। বাণিজ্যমন্ত্রী এর আগে জানিয়েছিলেন যে বাজারে ডিমের দাম না কমলে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। গতকাল রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির এই অনুমতি দেয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। এসব পণ্য হলো – ডিম, আলু ও দেশি পেঁয়াজ। প্রতিটি ডিমের বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ টাকা। তবে এই দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে না। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারীতে বেশি দামে কেনার কারণে তারা সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে পারছেন না।

যে চারটি কোম্পানিকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তারা হলো মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার্স, টাইগার ট্রেডিং ও অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেড।

ডিম আমদানি করার ক্ষেত্রে চারটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। এর প্রথমটি হলো, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু মুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে।

এ ছাড়া, নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না এবং সরকারের অন্যান্য বিধি–বিধান প্রতিপালন করতে হবে – এমন দুটো শর্তের কথা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, ঠিক কবে ডিম আমদানি হবে তা চার প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তবে তাদেরকে বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব ডিম আমদানি করতে হবে। তিনি বলেন, যেহেতু ঋণপত্র খুলে আমদানি করতে হবে, সেক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, কোন দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে, সেটিও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। আমদানিকারকেরাই ঠিক করবেন যে তারা কোন দেশ থেকে ডিম আমদানি করবেন।

তবে আমদানি করা ডিমের দাম কী হবে, তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য সচিব বলেন, বাজারে যেহেতু ডিমের খুচরা মূল্য ১২ টাকা করে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তাই আমদানি করা ডিমও প্রতিটি ১২ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, দেশে প্রতি দিন চার কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে। ডিমের ওই চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়ে এক দিনের চাহিদা পূরণ করা যায়, শুরুতে সেই সংখ্যক ডিম আমদানি করা হবে।

তবে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রয়োজন হলে আরও ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। ডিমের বাজারে সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.